‘দূতাবাস উৎসব – বৈশ্বিক সংস্কৃতিকে তুলে ধরা’ এই শিরোনামে নেদারল্যান্ডের দি হেগ-এ বাৎসরিক আয়োজনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শান্তি এবং ন্যায়বিচারের শহর নামে খ্যাত দি হেগে দিনব্যাপী উৎসবে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশী দর্শকদের আগমন ঘটেছে। যেখানে বাংলাদেশসহ ৬২টি দেশের দূতাবাসের প্যাভিলিয়ন ছিল। ১৩০ টির বেশী আন্তর্জাতিক সংস্থা, ১১৫টি দূতাবাস এবং কন্স্যূলেটস এবং প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশী বিদেশীদের বাস দি হেগকে সত্যিকার অর্থেই একটি আন্তর্জাতিক নগরীতে পরিণত করেছে। সে বিবেচনায় দূতাবাস উৎসব যেন সারা পৃথিবীর লোকজনের একটি মিলনমেলা। অংশগ্রহণকারী দূতাবাসসমূহ তাদের স্ব স্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ঐতিহ্যবাহী পোশাক আশাক এবং খাবার তুলে ধরার প্রয়াস নিয়ে থাকে। দি হেগ মিউনিসিপ্যালিটি সহ আয়োজকদের বছরব্যাপী প্রস্তুতি এবং প্রচারনার ফলে এই উৎসবে প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে।
বিগত কয়েক বছর ধরে চলমান এই উৎসবে দি হেগস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। বিদেশীদের মাঝে বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
উৎসবে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন যেন ছিল দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশের পতাকা, নকশী কাঁথা এবং দেশীয় বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে দৃষ্টিনন্দনভাবে সজ্জিত বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় হস্তশিল্প, হাতে বোনা দ্রব্যাদি, জামদানী শাড়ী, মাটির শিল্পকর্ম, কাসার তৈজসপত্র, পাট এবং চামড়ার তৈরী জিনিসপত্র এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী দ্রব্যাদি। ট্যুরিজমের উপরও বিভিন্ন প্রকাশনা প্যাভিলিয়ন থেকে দর্শকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। দেশীয় খাবার তুলে ধরার প্রয়াসে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন দর্শনার্থীদের পরিবেশন করে সিঙ্গারা, সমুচা, পিঁয়াজু, মাছের চপ, সাসলিক, ইলিশ ভাঁজা, বিরিয়ানী, রসগোল্লা, গোলাপজাম ইত্যাদি।
নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল এবং তার সহধর্মিণী ড. দিলরুবা নাসরিন প্যাভিলিয়নে উপস্থিত থেকে দর্শকদের স্বাগত জানান এবং আগ্রহী দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। দূতাবাস পরিবারের সকল সদস্যরাও প্যাভিলিয়নে আগত দর্শকদের সাদর অভ্যর্থনা এবং নানাবিধ সেবা প্রদানে ব্যস্ত দিন অতিবাহিত করেন। দর্শনার্থীরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানী শাড়ী এবং অন্যান্য জিনিসপত্রে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
দেশী এবং বিদেশী সকল দর্শকদের মাঝে পরিবেশিত বাংলাদেশী বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের ছিল ব্যাপক চাহিদা। এছাড়া, বাংলাদেশী শিশু অহনা উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্বে দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে যা উপস্থিত দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রশংসা অর্জন করে।
রাষ্ট্রদূত বেলাল এই উৎসবের সুযোগে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আগত দর্শনার্থীদের বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা সম্পর্কেও ধারণা দেয়ার প্রয়াস নেন। এছাড়াও তিনি উৎসবের আয়োজকদের এ ধরনের আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।