ডায়াবেটিস হলে শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোনের অভাবে অথবা ইনসুলিনের দুর্বল কার্যকারীতার কারণে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। রক্তের সুগার অব্যবহূত অবস্থায় থাকতে থাকে। এর ফলে শরীরে নানান অসুবিধা দেখা দেয়। ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের: টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস। অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন একেবারেই নিঃসরণ না হলে হয় টাইপ ১ ডায়াবেটিস। আর একটু কম ইনসুলিন নিঃসরণ বা ইনসুলিনের দুর্বল কার্যকারীতার কারণে হয় টাইপ ২ ডায়াবেটিস। একটু সচেতন হলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে হলে জীবনযাত্রার ধরনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। কাজগুলো অতিশয় কঠিন কিছু নয়।
১. শরীরের ওজন কমানো:
শরীরের ওজন কমালে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। কম খাওয়া আর বেশি পরিশ্রম করা শরীরের ওজন কমানোর গোপন কথা। শরীরের ওজন কমাতে চাইলে যে পরিমাণ ক্যালরি শরীরের জন্য প্রয়োজন, তার চেয়ে একটু কম গ্রহণ করতে হবে আর ব্যবহার করতে হবে তার চেয়ে বেশি। অর্থাত্ খাবার খেতে হবে একটু কম, আর শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে একটু বেশি।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করা:
দৈনিক ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন দ্রুতলয়ে হাঁটা খুবই ভালো ব্যায়াম। এছাড়া সাইকেল চালানো, জগিং, সাঁতার কাটা, ইত্যাদিও ভালো ব্যায়াম। ব্যায়াম করলে ইনসুলিন হরমোনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রক্তের সুগার সঠিক মাত্রায় থাকে। শরীরের ওজন কমে। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাও সঠিক থাকে।
৩. খাবারে তেল চর্বি কম থাকা:
শরীরের মোট ক্যালরি চাহিদার ৩০ শতাংশের বেশি যেন তেল থেকে না আসে। আর স্যাচুরেটেড তেল থেকে যেন তা ৭ শতাংশের বেশি না হয়।
৪. আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া:
আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য খাদ্য, ইত্যাদি বেশি খেলে তা রক্তের সুগারের মাত্রা সঠিক রাখতে সহায়ক। আঁশযুক্ত খাবারে ক্যালরি কম। তাই শরীরের ওজন কমাতেও ভালো ভূমিকা রাখে আঁশযুক্ত খাবার।
অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ্
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ
কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ