বিশ্বের ১০০টি সমুদ্রবন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ৭১তম অবস্থান অর্জন করেছে। ২০১৬ সালে এক বছরে কনটেইনার ওঠানামা সূচক বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের সেরা ১০০টি বন্দরের তালিকা প্রকাশ করেছে শিপিংবিষয়ক ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’। সেই তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর পাঁচ ধাপ এগিয়ে ৭১তম অবস্থানে পৌঁছেছে। এর আগে ২০১৫ সালের তালিকায় ছিল ৭৬তম, আর ২০১৪ সালে ছিল ৮৭তম।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম খালেদ ইকবাল বলেন, ‘বিগত আট বছরে চট্টগ্রাম বন্দর ২৭ ধাপ এগিয়েছে। সীমিত ক্ষমতা, যন্ত্রপাতি সংকট, জেটি সংকটের মধ্যেই দক্ষতা ও উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই এই অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের উৎপাদনশীলতা, পণ্য ওঠানামা ও পোর্ট দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে লয়েডস লিস্ট তালিকা তৈরি করেছে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়ন হওয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। এর প্রভাবে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে, যা চট্টগ্রাম বন্দর প্রায় এককভাবে সামাল দিয়েছে।
‘লয়েডস লিস্ট’ তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বের ১০০টি সমুদ্রবন্দরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীনের সাংহাই বন্দর, যে কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে ৩ কোটি ৭১ লাখ একক। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুর আর তৃতীয় স্থানে আছে চীনের শেনজেন বন্দর।
পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের আগে রয়েছে ভারতের দুটি বন্দর একটি মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দর ৩৩তম স্থানে, আরেকটি মুন্দ্রা পোর্ট ৪৫তম স্থানে। পাকিস্তানের করাচি বন্দরের অবস্থান চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে ছয় ধাপ নিচে অর্থাৎ ৭৭তম অবস্থানে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে আগে রয়েছে মালয়েশিয়ার দুটি বন্দর, ইন্দোনেশিয়ার দুটি বন্দর, শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর, ভিয়েতনামের হোচিমিন সিটি, থাইল্যান্ডের লাম চেবাং বন্দর।
জানা গেছে, দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ২০১৬ সালে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার একক কনটেইনার ওঠানামা করেছে। এর আগের বছরের চেয়ে কনটেইনার ওঠানামায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। ২০১৫ সালে ২০ লাখ ২৪ হাজার একক ওঠানামা করে লয়েডস লিস্ট তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৭৬তম। আর ২০১৪ সালে ১৭ লাখ একক ওঠানামা করে অবস্থান ছিল ৮৭তম। ২০১৩ সালে ছিল ৮৬তম এবং ২০১২ সালে ছিল ৯০তম, আর ২০০৯ সালে এই অবস্থান ছিল ৯৮তম।
এ বিষয়ে শিপ হ্যান্ডলিং ও বার্থ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এ কে এম সামশুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘এটি অবশ্যই চট্টগ্রাম বন্দর ও ব্যবহারকারীদের জন্য বড় অর্জন। কারণ এর মাধ্যমে বিদেশে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি বাড়বে, এর সুফল ভোগ করবে দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা। ’
বন্দর চেয়ারম্যান এম খালেদ ইকবাল বলেন, ‘কম সময়ে বেশি পণ্য ওঠানামা করা মানেই ব্যবসার ব্যয় কমে যাওয়া। আমরা সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগের মাধ্যমে জাহাজের গড় অবস্থানকাল দুই দিনে আনতে চাই। এতে পণ্য পরিবহনের খচর আরো কমে আসবে।