ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে নিজের অভিষেক ম্যাচেই ৫ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন নতুন টাইগার বোলিং সেনসেশন মুস্তাফিজুর রহমান। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিজের টেস্ট অভিষেকেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে বিশ্বরেকর্ড করলেন তিনি। বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে কোনও ক্রিকেটার নিজের ওয়ানডে ও টেস্ট অভিষেকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হননি। মুস্তাফিজই এর প্রথম উদাহরণ।

চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে বল হাতে মুস্তাফিজ মাত্র ৩টি উইকেট নিলেও সেটিই ছিল মূলত ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়া এবং বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসানো সবকিছুর পেছনে ছিল মুস্তাফিজের ৪ বলে ৩ উইকেট নেওয়া। আর এই অবদানের যথাযোগ্য স্বীকৃতি তিনি পেলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে।

এই পর্যন্ত ১০০ জন ক্রিকেটার আছেন যারা ওয়ানডে অথবা টেস্ট অভিষেকে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। কিন্তু উভয়টিতে ম্যাচ সেরা হওয়ার মতো রেকর্ড মুস্তাফিজ ছাড়া আরও কেউই করতে পারেননি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে যেভাবে মুস্তাফিজ উইকেট নিয়েছেন তার চিত্রটা ছিল এরকম- প্রথম ইনিংসে চা বিরতির পর মাঠে নামেন প্রোটিয়া অধিনায়ক হাশিম আমলা ও তেমবা বাভুমা। প্রোটিয়াদের রান ৩ উইকেটে ১৬৫। ইনিংসের ৬০তম ওভারটি বল করতে আসেন মুস্তাফিজ। রাউন্ড দ্য উইকেট বল করছিলেন তিনি। প্রস্তুত হাশিম আমলা। ডেলিভারিটি ছিল কোণাকুনি অফস্টাম্পের বাইরে, ফলে ধৈর্য্যচ্যুতি হয় আমলার। অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বল ঠাঁই নেয় উইকেটরক্ষক লিটন কুমারের গ্লাভসে। আর এ বড় উইকেটটাই ছিল মুস্তাফিজের প্রথম টেস্ট উইকেট। ওভারের ২য় বলটিও ছিল বিষ মাখানো। নিজের সেই কাটারে আবারও পরাস্ত করলেন জেপি ডুমিনিকে। মাঠে তখন উঠেছে জোরালো এলবিডব্লিউ এর আবেদন। আম্পায়ার তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। সাকিব আল হাসানের অভিজ্ঞ চোখে কিন্তু ধরা পড়েছে ভিন্ন চিত্র। তিনি রিভিউয়ের আবেদন করলে তাতে সাফল্যও আসে।

এরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে অভিষেকেই হ্যাট্রিকের সামনে ছিলেন মুস্তাফিজ। ক্রিজে আসেন কুইন্টন ডি কক। ওভারের ৩য় বলটি ছিল ফুল লেন্থের। সোজা ব্যাটে খেলে কোনোমতে বেঁচে যান ডি কক। তবে চমক অপেক্ষা করছিল দেশের ক্রিকেটামোদীদের জন্য। অবাক নিশ্চই হয়েছেন ডি ককও। ৪র্থ বলটিতেই ডি ককের অফস্টাম্প উপরে ফেলেন মুস্তাফিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর পরিণত হয় ৬ উইকেটে ১৭৩।

তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ ওভারে ২১ রান দিয়ে কোনও উইকেট নিতে না পারলেও সাতক্ষীরার এই ছেলে ঠিকই ছিনিয়ে নিয়েছেন ম্যাচ সেরার মুকুটটি।