বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, কিছুদিনের মধ্যে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম ৩০ থেকে ৩৫ পয়সা বাড়তে পারে। তবে সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) সরাসরি জ্বালানি তেল আমদানির অনুমতি দিলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন উপস্থিত ছিলেন। নসরুল হামিদ বলেন, বিশ্ববাজারে দাম কম হলেও পিডিবি সরকার নির্ধারিত দামে বিপিসির কাছ থেকে জ্বালানি তেল কিনে থাকে। এতে খরচ বেশি হয়। বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। আয়-ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হয়। পিডিবি সরাসরি তেল আমদানির সুযোগ পেলে জ্বালানি ব্যয় কম হবে। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না।
কবে নাগাদ বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘এটা নির্ভর করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ওপর। সংস্থাটি এরই মধ্যে গণশুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। ওই শুনানির ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যেই দাম বাড়ানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সারা দেশ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে। এবার ঈদ মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো ছিল। তবে মেঘনায় যে টাওয়ার (সঞ্চালন গ্রিডের) ভেঙে পড়েছে সেটি এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। এ কারণে কয়েকটি জেলায় ঈদের সময় বিদ্যুিবভ্রাট ঘটেছে। তবে শিগগির এটি ঠিক হয়ে যাবে। ’ তিনি বলেন, ‘সরকার আগামী এক বছরের মধ্যে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে। ’
পিডিবি পাইকারিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৫ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে ৬ থেকে সাড়ে ১৪ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। বিইআরসি আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে গণশুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে।
প্রসঙ্গত, তেলভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সামিট, ওরিয়ন, ইউনাইটেড পাওয়ারসহ অনেককেই সরকার সরাসরি তেল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তেল আমদানি করলে এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা পেয়ে থাকে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান পিডিবির তেলভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর তেল আমদানির অনুমতি নেই। এ ক্ষেত্রে বিপিসির বেঁধে দেওয়া দামেই পিডিবির তেলভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্রগুলোকে তেল কিনতে হয়। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের যে কম দাম তার সুযোগ নিতে পারছে না সরকারি কম্পানিগুলো।