বাংলাদেশ ও গ্রিসের নতুন প্রজন্ম হতে পারে দুই দেশের সংস্কৃতির সেতু

0
816
বাংলাদেশ ও গ্রিসের নতুন প্রজন্ম হতে পারে দুই দেশের সংস্কৃতির সেতু
বাংলাদেশ ও গ্রিসের নতুন প্রজন্ম হতে পারে দুই দেশের সংস্কৃতির সেতু

বাংলাদেশ ও গ্রিসের নতুন প্রজন্ম হতে পারে দুই দেশের সংস্কৃতির সেতু। প্রবাসী বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা বিদেশের শিশু কিশোরদের মাঝে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ছড়িয়ে দিতে পারে। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস দুই দেশের শিশু-কিশোরদরে নিয়ে আয়োজন করেছে বিশেষ বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং কর্মসূচি।

অ্যাথেন্সের হালান্দ্রি সিটি করপোরেশনের সহায়তায় বাংলাদেশ দূতাবাস ১৯ এপ্রিল এথেন্সের হালান্দ্রি এলাকায় অবস্থিত একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি আয়োজন করে। গ্রিসের শিশু-কিশোরদের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই কর্মসূচির নাম দেয়া হয়- ‘বাংলাদেশ: এ কান্ট্রি ভাইব্রেন্ট কালচার এন্ড হেরিটেজ, রিচিং আউট প্রোগ্রাম ফর দ্য ইয়াং ফ্রেন্ডস ইন গ্রিস।’

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গ্রিক ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলাদেশ ও গ্রিসের জাতীয় পতাকা বিনিময় করে কর্মসূচির সূচনা করে। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন এবং হালান্দ্রি সিটি করপোরেশনের মেয়র সিমোস রুসোস।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হালান্দ্রি সিটি করপোরেশনের শিক্ষা বিষয়ক ভাইস মেয়র কুরাসসি, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিষয়ক ভাইস মেয়র সার্জিও গাকাস, অ্যাথেন্সের হালান্দ্রি স্কুলের পরিচালক দিমেত্রিস স্টারিওনস, দূতাবাসের প্রথম সচিব সুজন দেবনাথ, প্রবাসী বাংলাদেশিদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দোয়েল একাডেমির পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা।

বাংলাদেশকে তুলে ধরতে গ্রিক শিশুদের কাছে প্রবাসী শিশুরা

এরপর দুই দেশের শিশু-কিশোরদের নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সম্প্রীতি বৃক্ষ রোপণ করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন বলেন, নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের নিয়ে এই আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের নতুন প্রজন্ম একে অপরের দেশকে জানতে পারছে এবং সংস্কৃতির আদান প্রদানও হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত এই আয়োজনের জন্য এথেন্সের হালান্দ্রি সিটি করপোরেশন, এথেন্সের হালান্দ্রি স্কুল এবং দোয়েলে একাডেমি- এর কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি শিশুদের প্রতি জাতির পিতার বিশেষ স্নেহের কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটও রাষ্ট্রদূত উপস্থিত শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরেন।

মেয়র এবং অ্যাথেন্সের হালান্দ্রি স্কুলের পরিচালক তার বক্তৃতায় এই আয়োজনের জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়ের জন্য এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে মেয়র, ভাইস মেয়র, এথেন্সের হালান্দ্রি স্কুলের পরিচালক এবং গ্রিক সরকারের পরিবেশ ও শিক্ষা সংক্রান্ত উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে বিশেষ সম্প্রীতি উপহার তুলে দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।

এরপর বাংলাদেশকে তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোররা। প্রেজেন্টেশনের সার্বিক সমন্বয় ও পরিচালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব সুজন দেবনাথ।

অ্যাথেন্সের প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিচালিত স্কুল বাংলাদেশ দোয়েল একাডেমির পাঁচ শিক্ষার্থী বিপুল সংখ্যক গ্রিক ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে গ্রিক ভাষায় বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে। উপস্থাপনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কথা উঠে আসে।

বাংলাদেশকে তুলে ধরতে গ্রিক শিশুদের কাছে প্রবাসী শিশুরা

অনুষ্ঠানে উপস্থিত গ্রিক শিক্ষক ও অভিভাবকগণ বাংলাদেশের উপর শিশু-কিশোরদের প্রেজেন্টেশানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে শিশু- কিশোর মনে সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বকে দৃঢ় করতে বাংলাদেশ ও গ্রিসের জাতীয় পতাকা উপহার দেয়া হয়। দুই দেশের শিশুরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে তাদের দেশকে তুলে ধরে বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে। বাংলাদেশি শিশুরা বাংলাদেশের মনোজ্ঞ ঐতিহ্যবাহী নৃত্য আর গ্রীক শিশুরা গ্রিক নৃত্য পরিবেশন করে।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ ও গ্রিসের শিশু-কিশোররা দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার বিনিময় করে।