প্রথম আর দ্বিতীয় টি২০’র মাঝে মাত্র একদিন গ্যাপ। এই গ্যাপের দিনটাতে অনুশীলনের ব্যবস্থা রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশ দল তাই আজ হোটেলবন্দী। এখানে বসেই তারা খোঁজার চেষ্টা করছে প্রথম টি২০তে জয়েরমত অবস্থায় থেকেও কেন এভাবে হারতে হলো। দ্বিতীয় টি২০তে কিভাবে ভালো করা যায় এবং কিভাবে ওয়ানডের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা যায়- এসব নিয়ে।

এরই মধ্যে, হোটেলে বসেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হলেন বাংলাদেশ দলের ওপেনার সৌম্য সরকার। বললেন, প্রথম টি২০তে তাদের আসলে কি কি সমস্যা হয়েছিল। আর দ্বিতীয় টি২০তে তারা কী করতে চান। মূলতঃ প্রথম টি২০তে যেসব ভুল হয়েছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিতে চায় বাংলাদেশ দল এবং সেই শিক্ষার আলোকে কামব্যাক করাই এখন মূলমন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে মাশরাফিদের জন্য।

প্রথম টি২০তে প্রোটিয়াদের ১৪৮ রানের মধ্যে বেধে ফেলার পরও কেন এভাবে হারতে হলো? এ প্রশ্নের জবাবে সৌম্য সরকার বলেন, ‘আসলে মূল সমস্যা হয়েছিল, আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। বোলিং ফিল্ডিংয়ে আমরা ভালো করেছি। পরিকল্পনা কাজে লাগিয়েছি। কিন্তু ব্যাটিংয়ে এসেই সব পরিকল্পনা উল্টে গেছে। কারণ হচ্ছে, আমাদের ওপর (তামিম+সৌম্য) দায়িত্ব ছিল অন্তত প্রথম ৬ ওভারে ৪০ থেকে ৫০ রান তুলে দেওয়া। কিন্তু আমরা দু’জন সেটা পারিনি।’

সম্ভাবনা যে তখনও হারিয়ে যায়নি এবং মাঝ পথে এসেই শেষ হয়ে যায় সেটা জানালেন সৌম্য, ‘তবুও সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু মাঝ পথে এসে যখন দ্রুত মুশফিক ভাই আউট হয়ে গেলেন, তখনই পরের সবাই হতাশ হয়ে যায় এবং তাদের ওপর চাপ পড়ে বেশি। যে কারণে অন্যরা সেই চাপ নিতে পারেনি এবং আমাদের এভাবে হারতে হয়েছে।’

অনুশীলনে না গেলেও হোটেলে দীর্ঘসময় ধরে চলেছে টিম মিটিং। সেখানে খেলোয়াড়দের প্রতি কী বার্তা দেওয়া হয়েছে? জানতে চাইলে সৌম্য বলেন, ‘আমাদের প্রতি একটাই বার্তা। সেটা হলো যার যে কাজ, সেটা যেন সঠিকভাবে শতভাগ করতে পারি। তাহলেই জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।’

বাংলাদেশ তো টানা জয়ের মধ্যে ছিল। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও হারতে হলো। এটা আসলে বাংলাদেশের ভালো পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতার ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলবে? সৌম্য বলেন, ‘আসলে আমাদের ধারাবাহিকতার কোন সমস্যা না এবং আমি মনে করি না এ ব্যাপারটা কোন প্রভাব ফেলবে। আমরা এই দুটা ম্যাচে ভালো খেলতে পারিনি তাই, ফল ভালো হয়নি। কিছু ভুল ছিল আমাদের। এখন একটাই লক্ষ্য, সেই ভুলগুলো শুধরে, যেভাবে হোক কামব্যাক করা। টি২০তে ভালো করে ওয়ানডে সিরিজের আগে নিজেদের মনোবল বাড়ানো এবং প্রস্তুতি ভালো করে নেওয়াটাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’

সৌম্য নিজেও তার পারফরম্যান্স নিয়ে কিছুটা হতাশ। শুরুটা খুব ভালো করেন। কিন্তু ইনিংসকে লম্বা করতে পারছেন না। বিষয়টা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে একটা সেঞ্চুরি পেয়েছিলাম। এরপর আর ইনিংসকে বড় করতে পারছি না। এ কারণে নিজের মধ্যেও কিছুটা হতাশা রয়েছে। এ নিয়ে কাজ করছি। কোচসহ সিনিয়র সবার সঙ্গে কথা বলছি, কিভাবে আরও ভালো করা যায়।’

দলে টি২০ স্পেশালিষ্ট বলতে শুধু একজন, সাকিব আল হাসান। দলের অন্যদের সাকিব সহযোগিতা করেন কি না? জানতে চাইলে সৌম্য বলেন, ‘সাকিব ভাই আমাদের সবাইকেই সহযোগিতা করেন। তার কাছ থেকেই অনেক কিছু শিখতে পারছি আমরা। তবে, এটা ঠিক, তার একার ওপর পুরো দল নির্ভরশীল না। ভালো করতে হলে সবাইকেই ভালো করতে হবে।’

সৌম্য সরকারের মতে টি২০ শক্তির নয় বুদ্ধির খেলা। কিভাবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারণ, এই খেলাটি অনেক বেশি ক্যালকুলেটিভ। আপনি একটি বলে ছক্কা মারলেন, পরের বলেই হয়তো আউট হয়ে যেতে হবে। সুতরাং, অনেক হিসাব করে, পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হয়।’