শক্তি সর্বজনীন একটি উৎস। মাসিক বিল কমানোই শক্তি সঞ্চয় না, বরং প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তির ব্যবহার করাই হলো বেশি কার্যকর। এতে করে অন্যান্যরাও সমানভাবে শক্তির উপযুক্ত ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু কিভাবে আরো দক্ষতার সঙ্গে শক্তি ব্যবহার করা যায়? আপনি কিছু অভ্যাস বদলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারেন সহজে-
১. বিদ্যুতের সহজ ব্যবহার:
বর্তমানে আগের দিনের মতো পানি চুলায় গরম কেউ করে না। খাবার গরম করতে ওভেন, গোসল করার জন্য গিজার ব্যবহার করে অনেকেই। পানি গরম করতে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে কেতলির ব্যবহার ভালো একটি বুদ্ধি।
বিদ্যুতের প্লাগ থেকে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের সুইচ বন্ধ না করা মানে এই না যে এটি স্ট্যান্ডবাই মুড বা বিদ্যুতের ব্যবহার করছে না। বছরের পর বছর এরকম চলতে থাকলে এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। যদি বৈদ্যুতিক প্লাগ থেকে অ্যাপ্লায়েন্সগুলোর সুইচ বন্ধ করে দেয়া যায় তবেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
২. শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের স্বল্প ব্যবহার:
গ্রীষ্মকালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধই করেন না অনেকে। দীর্ঘ সময় ধরে তা পুরোদমে চলতে থাকে। ঠাণ্ডা অনুভবের জন্যই যন্ত্রের ব্যবহার চলতেই থাকে। কিন্তু এই যন্ত্রটিই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করছে। ঠাণ্ডা থাকতে এটিই একমাত্র মাধ্যম নয়। দিনের বেলা যদি ঘরের জানালা বন্ধ করে রাখা যায়, আর বাড়িকে সুন্দরভাবে বাগানের সৌন্দর্যে সাজানো যায়, তাহলে আপনি গরমের মধ্যে শীতল আবেশ পাবেন। জানালার উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে ৭ শতাংশ বিল কমানো গেলে মন্দ না!
যদি এতেও কাজ না হয়, তবে কেননা একটি সহজ পদ্ধতিতে আরো বেশি ঠাণ্ডা থাকা যায়? ফ্যানের সামনে যদি একটি গামলা বা বালতিতে বরফের টুকরা রেখে দেয়া যায় তবে মন্দ কী? বরফের টুকরার উপর দিয়ে যখন ফ্যানের বাতাস যাবে তখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের চেয়ে কোনো অংশে কম ঠাণ্ডা অনুভূত হবে না, বরং বিদ্যুতের খরচ কমবে দ্বিগুণ।
৩. নতুনত্বের এখনই সময়:
এখনকার হোম অ্যাপ্লায়েন্সগুলো অনেক বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। যদি পুরাতন অ্যাপ্লায়েন্সগুলো পরিবর্তন করে নতুন অ্যাপ্লায়েন্স বাড়িতে আনতে হয় তবে তাও গ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে পুরাতন রেফ্রিজারেটরের জন্য এটি বেশি প্রযোজ্য। পুরাতন ছোট রেফ্রিজারেটরের বদলে ঘরে নতুন বড় রেফ্রিজারেটর কিনে আনা অনেক বেশি যুক্তিসঙ্গত।
৪. লাইট ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া:
ঘরের সবাইকে এমন শিক্ষা দেয়া উচিৎ যাতে করে লাইট জ্বালানো ও নেভানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন হয়। এতে করে বৈদ্যুতিক বিল অনেক কমানো যায়। এ ছাড়া লাইটের ধরণের উপরও নির্ভর করে বিদ্যুতের খরচ। বর্তমানে এলইডি লাইটও ব্যবহার করতে পারেন আপনি। বিদ্যুতের সাশ্রয়ের পাশাপাশি তা হবে পরিবেশ বান্ধব।
৫. নিজেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করুন:
সোলার প্যানেল প্রতিষ্ঠা করতে হয়তো প্রাথমিকভাবে খরচ বেশি, কিন্তু সুদূর ভবিষ্যতে তা সাশ্রয়ী ব্যবহারকারী হিসেবে পরিণত করতে সহায়তা করবে। ঘরের ছোট-খাট হোম অ্যাপ্লায়েন্স যেমন- বয়লার, কয়েকটি লাইট সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ব্যবহার করা গেলে বিদ্যুতের উপর চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে। প্রতিটি বাড়িতে যদি সোলার প্যানেল বসিয়ে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা যায়, তবে এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ খরচ কম হতো।
গতানুগতিক চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে ভিন্নভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। বিদ্যুতের খচর কমানো সবার দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে মাধ্যমে আপনিও মাসিক খরচ হ্রাস করতে পারেন। সেই সঙ্গে যত কম বিদ্যুৎ খরচ হবে পরিবেশের উন্নয়নে তত বেশি ভূমিকা রাখবেন আপনি। বেইজ টেকনোলজিস।