সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা

0
443
সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা
সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। গত বছরের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলার দায় আইএস স্বীকার করেছে।
এ ছাড়া বেশ কিছু হামলার ঘটনায় আল-কায়েদার ভারতীয় উপ-মহাদেশীয় শাখা (একিউআইএস) এবং আইএস দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশ সরকার বরাবরই উগ্রবাদী সহিংসতার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় জঙ্গিদের দায়ী করেছে। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো বাংলাদেশে উগ্রবাদী মতাদর্শ বিস্তার ও কর্মী-সমর্থক সংগ্রহের কাজে সোশ্যাল মিডিয়াকে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) ব্যবহার করেছে। আইএস ও এআইকিউএস সংশ্লিষ্ট ওয়েকসাইট, ভিডিও ও প্রকাশনায় বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে একইসঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতার প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে প্রকাশিত ‘কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরজিম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মার্কিন সরকারের এই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে মোট জঙ্গি হামলা আগের বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ কমেছে। এসব হামলায় নিহতের সংখ্যাও কমেছে ১৩ শতাংশ। একই সময়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। তবে গুলশান-শোলাকিয়া হামলার পর জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে মোট ১৮টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আইএস দায় স্বীকার করেছে। এর সবচেয় ভয়াবহ হামলা হয় গত বছরের ৩১ জুলাই হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে। পাঁচ বাংলাদেশি হামলাকারী ২০ জিম্মি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আগ্নেয়য়াস্ত্র, বিস্ফোরক ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। নিহতদের বেশির ভাগই বিদেশি নাগরিক।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, বিরোধী কিংবা স্থানীয় জঙ্গিদের প্রতি সন্দেহ জারি রাখলেও বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে রেখে তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু অভিযান আইশৃঙ্খলা বাহিনী- বিশেষ করে র্যাবের সাজানো বলে পর্যেবেক্ষকদের বিশ্বাস।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বিদেশি জঙ্গিদের ধরতে প্রয়োজনীয় আইন না থাকলেও বাংলাদেশ সন্ত্রাসী সন্দেহে কয়েকজন বিদেশি সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ স্থল, জল ও আকাশ সীমারেখা শক্তিশালী করেছে। সামনে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশের সীমান্তে অবকাঠামো নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে আকাশপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সজাগ হয়েছে। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কার্গো যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে। পরে জার্মানিও এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।