বৈশ্বিক পাসপোর্ট মর্যাদায় অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ
বৈশ্বিক পাসপোর্ট মর্যাদায় অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ

হাতে জার্মানির পাসপোর্ট আছে? বিশ্বের ১৭৭টি দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পাবেন। বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীরাও এই সুবিধা ভোগ করে থাকেন, তবে তা মাত্র ৩৮ দেশে। একটি দেশ পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে কোন অবস্থানে রয়েছে এর ওপর নির্ভর করে কয়টি দেশে ভিসা ছাড়া ঢোকা যাবে। এ বছর ১৭৭ স্কোর পয়েন্ট নিয়ে র্যাংকিংয়ে বিশ্বে প্রথম স্থানে আছে জার্মানি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিঙ্গাপুরের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ১৭৬টি দেশে ভিসামুক্ত সুবিধা পায়। ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, নরওয়ে, সুইডেন ও যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই যেতে পারে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে। সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে আছে এবং তা প্রতিবেশী ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বিচারেও।

২০১৮ সালের হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনারস পাসপোর্ট সূচকে শেষ দশে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ওই র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশসহ ইরান, কসোভো ও লেবাননের যৌথভাবে অবস্থান ৯৬তম। গত ৯ জানুয়ারি ফ্রান্সের পরামর্শক ফার্ম হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনারস এ বছরের সূচক প্রকাশ করে। ওই তালিকায় বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলকে ১ থেকে ১০৪তম স্থান দেওয়া হয়।

সূচক অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান এক ধাপ পিছিয়েছে। ৩৮ পয়েন্ট স্কোর নিয়ে গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৫তম। এবারও বাংলাদেশের স্কোর পয়েন্ট অভিন্ন। বাংলাদেশের স্কোর পয়েন্ট ৩৮ অর্থাৎ বিশ্বের ৩৮টি দেশে বাংলাদেশি সাধারণ পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভিসামুক্ত বা আগমনী ভিসায় প্রবেশাধিকারের সুযোগ আছে। এ অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো মর্যাদা মালদ্বীপের পাসপোর্টের। ৫৮তম স্থানে থাকা ওই দেশটির স্কোর ৮৩। অর্থাৎ মালদ্বীপের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ৮৩টি দেশে ভিসা ছাড়া যেতে পারে। স্কোর পয়েন্ট ভুটানের ৫২, ভারত ৪৯, মিয়ানমার ৪২, শ্রীলঙ্কা ৪১, নেপাল ৩৬ ও পাকিস্তানের ৩০।

হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনারস কাজ করে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) সঙ্গে সমন্বয় করে। আইএটিএর তথ্যভাণ্ডার থেকে ভ্রমণ বিধিনিষেধের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিটি দেশের স্কোর ও সূচক নির্ধারণ করে হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনারস। এ ছাড়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে পর্যটন না ব্যবসায়িক কাজে ভ্রমণ, ন্যূনতম তিন দিন অবস্থান, ফিরতি টিকিট বা পর্যাপ্ত তহবিলের আবশ্যকতা—এসব বিষয়ও আমলে নেওয়া হয়।

ঢাকার এক কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে বাংলাদেশ এখনো দরিদ্র একটি দেশ। এ দেশের জনগণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে। প্রতিটি শ্রমবাজারের একটি নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা আছে। এর বাইরেও অনেকে পর্যটক বা শিক্ষার্থী ভিসায় শ্রমবাজারগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ কারণেই অনেক সময় বিভিন্ন দেশে পর্যটক বা শিক্ষার্থী ভিসা নিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সন্দেহ করা হয়।