কাগিসো রাবাদার দুর্দান্ত বোলিং এবং ফাফ ডু প্লেসিসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে আট উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অভিষেকে রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে বাংলাদেশকে শুরু থেকেই চেপে ধরেন রাদাবা।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দেওয়া ১৬১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩১.১ বলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বল্প রানের পুঁজি নিয়ে দলের পক্ষে প্রথম আঘাত হানেন অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক প্রতিপক্ষের অধিনায়ক হাসিম আমলাকে (১৪) মাহমুদউল্লাহ ক্যাচে পরিণত করে স্বাগতিকদের উল্লাসে মাতান। এরপর ১৪তম ওভারে আরেক ওপেনার ডি কককে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরে ফেরান অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। আউট হবার আগে ৪১ বলে ৫টি চারে ৩৫ রান করেন সফরকারি দলের এই ব্যাটসম্যান।
টানা দুদিন প্রবল বর্ষণ। ভেজা কন্ডিশন ও কাভার ঢাকা উইকেট দেখেও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা আজ টসে জিতে ব্যাটিং নিলেন। আট ব্যাটসম্যান খেলিয়ে বাংলাদেশ ২০০ রানও করতে পারল না। গুটিয়ে গেল ১৬০ রানেই। রাবাদার বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ১৬১ রানের লক্ষ্য দিতে পারে বাংলাদেশ। ১৬ রানে ছয় উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেন এই প্রোটিয়া পেসার। শুরু থেকেই প্রশ্নটা ভাসছিল হাওয়ায়-কেন তবে টসে জিতে আগে ব্যাটিং?
তবে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা হিসেবে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘টসের সিদ্ধান্ত¯একজনের ওপর নির্ভর করে না। দলের সিনিয়র খেলোয়াড়, কোচের সম্মিলিত সিদ্ধান্তেই নেওয়া হয়। আর টসে জিতে ব্যাটিং না নেওয়ার কোনো কারণ দেখি না। কারণ উইকেটে কিছুই ছিল না। সুইং বা অন্য কিছুই ছিল না। বরং খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। উইকেট যদি খারাপই হতো তবে, সাকিব-সৌম্য যেভাবে শুরু করেছিল, তেমনটা হতো না।’
কিন্তু আট ব্যাটসম্যান খেলিয়েও কেন এমন বিপর্যয়? মাশরাফির জবাব, ‘আট ব্যাটসম্যানের কথা বললে, বিশ্বকাপে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ফর্মে ছিল। তখন আমরা পাঁচ বোলার নিয়ে খেলেছিলাম। কিন্তু গত কয়েকটা ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারেনি। ব্যাটসম্যানরা যাতে স্বাধীনভাবে খেলতে পারে এ জন্য আট ব্যাটসম্যান নেওয়া। এ ছাড়া দলে রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) এসেছে। ওদের অনেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ছিল। এ ক্ষেত্রে রিয়াদকে স্পিনার হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল।’
বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ মূলত ধসিয়ে দিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। মাশরাফি প্রোটিয়া পেসারদের কৃতিত্ব দিলেও ব্যর্থতার দায় স্বীকারও করে নিচ্ছেন, ‘সে (রাবাদা) হ্যাটট্রিক করেছে। তাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। বিরাট অর্জন তার জন্য। একটা দলের পর পর তিন বলে তিনটি ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে এমনিতেই পিছিয়ে পড়তে হয়। তা ছাড়া আমাদের আট ব্যাটসম্যান ছিল। উইকেটও ভালো ছিল-সাকিব, নাসির সেটা প্রমাণও করেছে। একটা জুটিও হয়েছিল। সাকিব-মুশফিকের জুটিটা আরও বড় হলে ম্যাচের চেহারা অন্যরকম হতে পারত। আমরা ২০০ করতে পারল ওদের ওপর আরও চাপ তৈরি করতে পারতাম। কিন্তু সেটা হয়নি।’
তবে এখানেই থামতে চান না মাশরাফি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেÿপরের ম্যাচগুলোয় ফিরতে চান লড়াইয়ে, ‘এখনো দুটো ম্যাচ আছে। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। এটা ঠিক, দক্ষিণ আফ্রিকা ভালো দল। তবে আমরা আরও ভালো খেলতে পারি।’