বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের অভিন্ন নদী ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ বদলাতে চীন হাজার কিলোমিটারের একটি সুড়ঙ্গ নির্মাণ করছে। এর ফলে ভারতের অরুণাচলে নদীটির পানি কালো ও দূষিত হয়ে পড়েছে এবং মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী নদী থেকে হারিয়ে গেছে।

অরুণাচলের কংগ্রেস দলীয় এমপি নিনং ইরিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা এক চিঠিতে এ বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।

গত ৩১ অক্টোবর ওই পত্রিকায় প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে চীনের এক হাজার কিলোমিটার সুড়ঙ্গ নির্মাণের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, তিব্বত থেকে হাজার কিলোমিটার সুড়ঙ্গের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জিনজিয়াং অঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে চীন। এটি বিশ্বে কৃত্রিমভাবে নদীর গতিপ্রবাহ পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় পরিকল্পনা।

অরুণাচলের কংগ্রেস দলীয় এমপি নিনং ইরিং মোদিকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, ‘প্রমত্তা সিয়াং (ব্রহ্মপুত্র নদের আঞ্চলিক নাম) নদীর পানি এই নভেম্বর মাসে নোংরা ও কালো হওয়ার অন্য কোনো কারণ নেই। নদের চীনা অংশে ব্যাপক খননের কারণেই এটি হয়েছে। আন্তর্জাতিক দলও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ’

তিব্বতে উচ্চ মালভূমিতে জন্ম ব্রহ্মপুত্র নদের। চীনের ভাষায় ওই নদীর নাম ইয়ারলাং সেংপো।

দক্ষিণ তিব্বতে জন্ম নেয়া এই নদীর পানির গতিপথ এর আগেও পরিবর্তন করতে চেয়েছিল চীন।। সেবার বাধ দিয়ে পানি আটকিয়ে নদীর গতিপথ বদলাতে চেয়েছিল দেশটি। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশ এ নিয়ে আপত্তি জানানোর কারণে চীন সেখান থেকে সরে আসে।

কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। চীন সুড়ঙ্গ করে ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহ কমিয়ে দিতে চাচ্ছে। তিব্বত-সিনজিয়াং প্রজেক্টের আওতায় চীন এই বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। গত মার্চে এই পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয় চীন সরকার। ভারতের অরুণাচল রাজ্যের লাগোয়া তিব্বতে সাংগরি কাউন্টিতে এই সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

প্রকল্প শুরু করতে ওই এলাকায় একটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হবে। সেখানে ব্রহ্মপুত্রের পানি জমা করা হবে। পরে একটি কুপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গ দিয়ে ওই পানিকে সিনজিয়াংয়ে পাঠিয়ে দেয়া হবে।