সফটওয়্যার খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা

0
520

বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি ক্রমাগত বাড়ছে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে এ খাতে রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে সাত গুণ। প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৮ সাল নাগাদ সফটওয়্যার রপ্তানি ১০০ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

download (3)

আবার স্থানীয়ভাবেও অনলাইনভিত্তিক কেনাকাটা, আবেদন-নিবন্ধন ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) পরিশোধ; বিভিন্ন ব্যাংক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও মুঠোফোন কোম্পানির প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তি-সংক্রান্ত (আইটি) অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায়ও সফটওয়্যারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।দেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ, আইটি-সংক্রান্ত সেবা বা আইটিইএস, ই-কমার্সভিত্তিক ওয়েবসাইট সেবা, মুঠোফোনের অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়ন, আইটি অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি সেবা দিচ্ছে।

তবে দেশি-বিদেশি বাজারের এই সম্ভাবনা ভালোভাবে কাজে লাগাতে শিগগিরই সঠিক নীতি-পরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা। সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশ থেকে বছরে ২৫ কোটি ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি হয়; যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৩ কোটি ২৯ লাখ ডলার।

বেসিসের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে এ খাতে কাজ করছে ৮২৩ প্রতিষ্ঠান। কর্মরত আছেন আড়াই লাখের বেশি লোক। সঠিক পরিকল্পনায় এগোতে পারলে ২০১৮ সালের মধ্যে জনবল ১০ লাখে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করেন সংগঠনটির নেতারা। সফটওয়্যারের অভ্যন্তরীণ বাজারটিও বেশ বড়, যার আকার ৪৫ থেকে ৫০ কোটি ডলার। রপ্তানি আয় যোগ করলে এ খাতের আকার এখন ৭০ কোটি ডলারের।

কাজের ধরন অনুযায়ী সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো দুই রকমের—সরাসরি সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোকে বলা হয় আইটি কোম্পানি এবং সফটওয়্যার-নিয়ন্ত্রিত সেবা প্রদানকারী বা আইটিইএস কোম্পানি। বেসিসের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ৪৫ ভাগ আয় আসে সফটওয়্যার বিক্রি করে, বাকি ৫৫ ভাগ আয় আসে আইটিইএস-সংক্রান্ত সেবা থেকে।

দেশের সফটওয়্যার-শিল্পকে এগিয়ে নিতে ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ কার্যক্রমের আওতায় বেসিস চারটি লক্ষ্য সামনে রেখে এখন কাজ করছে। এগুলো হলো: ২০১৮ সালের মধ্যে রপ্তানি ১০০ কোটি ডলার ও কর্মসংস্থান ১০ লাখে উন্নীত করা, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিবছর এক কোটি করে বাড়ানো ও দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপিতে) সফটওয়্যার খাতের অবদান ১ শতাংশে নিয়ে যাওয়া।

বিশ্বে বর্তমানে বছরে প্রায় ২৫ হাজার কোটি ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানির বাজার রয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবেশী ভারত একাই রপ্তানি করে আট হাজার কোটি ডলারের। শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন প্রভৃতি এশীয় দেশও এ খাত থেকে ভালো আয় করছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার ২০১১ সালে এ খাতের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ৩০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশকেও রেখেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৩০টি দেশে সফটওয়্যার সেবা রপ্তানি করে। সবচেয়ে বড় পাঁচটি বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ডেনমার্ক।