মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে এ জাতিকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে দেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যায় মেতে ওঠে।
একাত্তরের সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে জাতি। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আবালবৃদ্ধবনিতা হাতে হাতে শ্রদ্ধার ফুল নিয়ে যায় রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ ও মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে।
সমবেত বাঙালি পুষ্পাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানায়। ঢাকার পাশাপাশি সারা দেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা আর ফুলে ভরে যায় দেশের স্মৃতির মিনারগুলো।
তুরস্ক সফর থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে দেশে ফিরে সকাল ৭টায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পৌঁছান। স্মৃতিসৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি সুসজ্জিত দল সশস্ত্র সালাম জানায়। তখন বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
পরে ফ্রান্স সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নাল আবেদিন।
রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পর সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের পদচারণায় সকাল থেকেই মুখর হয়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। অনেকে যান পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। এ সময় অনেকেরই হাতে ছিল জাতীয় পতাকা আর শ্রদ্ধার ফুল।
বিএনপির পক্ষে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মিরপুর স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে জঙ্গিবাদের স্থান নেই। তাদের কোনো অপতৎপরতা সফল হবে না। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ সময় তিনি বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।