শব্দের দশগুণ দ্রুতগতিতে চলার ক্ষমতা সম্পন্ন একটি পরমাণু অস্ত্রবাহী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রযানের সফল উৎক্ষেপণ পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। গত ১৮ মাসে এই ধরনের চতুর্থ পরীক্ষা চালানোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে চীনের গণমুক্তিফৌজ। গত রোববার উ-১৪ নামের যানটির এই পরীক্ষা চালানো হয় বলে নিশ্চিত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

এদিকে চীনের এই পরীক্ষার ব্যাপারে অস্বস্তি শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিনীদের ধারণা তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যুহকে ভেদ করতেই চীনের এই নবউদ্ভাবন। এই আকাশযানের ক্ষিপ্রতা ও দ্রুতগামিতার সামনে তাদের প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষাব্যুহ কোনো কাজে আসবে না। উড়ন্ত ‍যানটি একই সঙ্গে পরমাণু এবং প্রচলিত ওয়্যারহেডও ছুঁড়তে পারে।

এদিকে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে হংকং ভিত্তিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ‘এই ধরনের নিয়মিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পরীক্ষা চালানো আমাদের ভূখণ্ডে স্বাভাবিক ঘটনা। এই পরীক্ষা কোনো দেশকে এবং কোনো লক্ষ্যকে সামনে রেখে চালানো হয়নি।’

তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গত ১৮ মাসে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই আকাশযানের পরীক্ষাগুলো চালিয়েছে চীন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে মার্কিন নাক গলানোর বিরুদ্ধে নিজেদের পরমাণু সক্ষমতা প্রদর্শন।

মার্কিন ওয়েবসাইট ওয়াশিংটন ফ্রি বিকন সর্বপ্রথম এই পরীক্ষার কথা প্রকাশ করে। তারা জানায় এই আক্রমণাত্মক আকাশ যান অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তির কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত। মহাকাশের ধার দিয়ে চলার সময় এটি সুনির্দিষ্ট টার্গেটে পরমাণু এবং অন্যান্য প্রচলিত অস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম।

এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো শব্দের দশগুণ বেশি গতিতে অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ৭ হাজার ৬৮০ মাইল গতিতে চলার ক্ষমতা। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রকে ফাঁকি দিতে এটি ব্যাপকমাত্রায় আকাবাঁকা চলতে পারে।

এদিকে এমন এক সময়ে এই পরীক্ষা চালানো হলো যখন চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফ্যান চ্যাংলং সপ্তাহব্যাপী সফরে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানে করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অ্যাশটন কারটারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাশটন কারটারের সঙ্গে ফ্যানের বৈঠকের সময় দর কষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকার কৌশলের অংশ হিসেবে এই আকাশযানের পরীক্ষা চালিয়েছে চীন।