সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ও সিরিয়ার জঙ্গি বিমানগুলোর ব্যাপক বোমাবর্ষণে অন্তত ১৫০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে সরকার বিরোধীরা। এদিকে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জেনেভায় সিরিয়া নিয়ে নতুন করে বৈঠকের কথা বলেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টিফেন ডি মিসতুরা।
দেশটির হামা প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কট্টরপন্থি বিদ্রোহীদের জোট বড় ধরনের হামলা শুরু করার পর নতুন করে বোমা হামলা শুরু করা হয়। ইদলিবের বিদ্রোহীদের পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মী সালেম আবু আল আজেম বলেন, ‘রাশিয়া ও সরকারি বাহিনী বোমা হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫২টি মৃতদেহ ও ২৭৯ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছি আমরা।’ উদ্ধার করা মৃতদেহগুলো বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোর সামনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কট্টরপন্থি জঙ্গিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, চিকিত্সা কেন্দ্র ও অন্যান্য অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে না। অপরদিকে বিদ্রোহীদের দাবি, দেশের ওপর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে বিদ্রোহীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ছয়টি হাসপাতাল, পাঁচটি প্রতিরক্ষা কেন্দ্র ও কয়েকটি বিদ্যুত্ কেন্দ্রের ভিডিও ধারণ করেছেন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা কর্মীরা। এর পাশাপাশি উদ্বাস্তুদের কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রও আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। বোমা হামলা অভিযান শুরুর পর প্রথম কয়েক দিনেই এসব স্থাপনা ধ্বংস হয়।
ডি মিসতুরা ইতোমধ্যে জেনেভায় সপ্তম দফার বৈঠকের আয়োজন করলেও ওই বৈঠক থেকে তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি। এ আলোচনার অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হচ্ছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ভাগ্যের পরিণতি। সিরিয়ার বিরোধী গ্রুপ এবং বিভিন্ন পশ্চিমা শক্তি জোর দিয়ে বলছে যে, আসাদকে অবশ্যই ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু তার সামরিক অবস্থান অনেক শক্ত হওয়ায় তিনি ক্ষমতা ছেড়ে না দেওয়ার ব্যাপারে অটল রয়েছেন।