পাঁচ বছর পর আগামীকাল মঙ্গলবার আবার হচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন ভোট। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি থেকে নতুন দুই প্রার্থী—নৌকা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম এবং ধানের শীষ নিয়ে হাসান উদ্দিন সরকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আদালত এ নির্বাচন স্থগিত করলে সপ্তাহখানেক বিরতির পর মাসব্যাপী বিরামহীনভাবে চলেছে উভয় দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের প্রচারণা। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতিদিনই চলছে নগরীর অলিগলিতে ভোট প্রার্থনা। বিএনপি চায় এই সিটিতে নিজেদের জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। আর আওয়ামী লীগ চায় এবার জয় করায়ত্ত করে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে। আর সব কিছু ছাপিয়ে গাজীপুরবাসী চায় একজন যোগ্য নগরপিতার হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়ে দুর্ভোগ আর ভোগান্তি থেকে বাঁচতে। তারা এলাকার উন্নয়নসহ নাগরিক সুুযোগ-সুবিধার দ্রুত ব্যবস্থা চায়।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী গতকাল রবিবার রাত ১২টা থেকে বন্ধ হয়ে গেছে সব রকম প্রচার-প্রচারণা।  গতকাল সকাল থেকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরী ছেড়ে যাচ্ছে বাইরে থেকে আসা উভয় দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত। নিজেদের ভোটে দ্বিতীয়বারের মতো নগরপিতা পাবে গাজীপুরবাসী। তাই শহরে উৎসবের আমেজ। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছিল প্রার্থী ও সমর্থকরা। গতকাল ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পাড়া-মহল্লার অলিগলি চষে বেড়িয়েছে তারা। কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের বিভিন্ন শিল্প-কারখানার প্রবেশ ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ভোট চাইতে দেখা গেছে। সকালে কারখানায় শ্রমিক প্রবেশের সময় এবং বিকেলে ছুটির সময় শ্রমিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট ও দোয়া চেয়েছেন তাঁরা।

আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম প্রচারণার শেষ দিনে গাজীপুরের শালনা থেকে প্রচারণা শুরু করেন। সেখানে তিনি বলেন, নির্বাচনে নৌকার পক্ষে একটি জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গাজীপুরের মানুষ আর অনুন্নয়নের পথে থাকতে চায় না। তারা  উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবে। শালনার পর জাহাঙ্গীর আলম যান কোনাবাড়ী। সেখান থেকে বাসন এলাকার চৌরাস্তায় একটি পথসভায় তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে এখন হাঁটাচলার মতো রাস্তাঘাট নেই। বর্তমান মেয়র কিছুই করেননি। আমি এর অবসান চাই।’ তিনি বলেন, ‘এখন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাচিত হলে আমার পরিকল্পনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানাব।’

অন্যদিকে প্রচারণার শেষ দিনেও বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার সংবাদ সম্মেলন ডেকে এবং ভোটারদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। টঙ্গী থানা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, নির্বাচনী মাঠে তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বরং খুলনা স্টাইলে নির্বাচন করার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও হুমকি-ধমকি দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বানচাল করে দিচ্ছে। ইতিমধ্যে জোটের ৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকেও পুলিশের গাড়িতে দেখা যাচ্ছে।