১৩ বছর ধরে অন্তত ৫০০ শিশুকে ধর্ষণ করার অভিযোগে সুনীল রাস্তোগি নামে একজন সিরিয়াল রেপিস্টকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার ভারতের রাজধানীল নয়াদিল্লির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা নিউ অশোকনগর থেকে সুনীল আটক করে পুলিশ।

৩৮ বছরের এই সিরিয়াল রেপিস্ট পেশায় দর্জি। তার তিন কন্যাসহ পাঁচ সন্তান রয়েছে।

গত ১৩ বছর ধরে তিনি সাত থেকে ১১ বছরের শিশুদের একের পর এক ধর্ষণ করে গেছেন। প্রত্যেকটি ঘটনার সময় তিনি লাল জ্যাকেট ও জিন্স প্যান্ট পরা ছিলেন।

নয়াদিল্লি পুলিশের ডিসিপি ওমবির সিং জানান, জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত সুনীল নিউ অশোকনগরসহ দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ ও উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপুরে গিয়েও শিশুদের ধর্ষণ করেছেন।

ওমবির জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ করার জন্য ছোট মেয়েদের টার্গেট করার কথা স্বীকার করেছেন সুনীল।

তিনি বলেছেন, শিশুদের ধরার জন্য তিনি বিভিন্ন এলাকার স্কুলের তালিকা ধরে সেখানে গিয়ে ঘুরঘুর করতেন। বিশেষ করে দুপুর ২টা এবং বিকাল ৪টার দিকে স্কুল ছুটির সময় সেখানে উপস্থিত হতেন তিনি।

এ দু’ সময়ে কোনো শিশুকে একা স্কুল থেকে বাড়ি যেতে দেখলে তাদের কাছে নিজেকে বাবার বন্ধু বলে পরিচয় দিতেন সুনীল। তারপর তাদের জামাকাপড় এবং খাবার দেয়ার কথা বলে নির্জন গলি ও গোডাউনে নিয়ে ধর্ষণ করতেন তিনি।

গত ১০ জানুয়ারিও একটি বহুতল ভবনের নিচে নিয়ে দুটি শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এ সময় বাচ্চারা চিৎকার করলে পালিয়ে যান তিনি। পরে সিসিটিভির ফুটেজের সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গত ১০ জানুয়ারি নিউ অশোকনগর থানায় দুটি অপহরণের অভিযোগ করেন ৯ ও ১০ বছরের দুটি শিশুর অভিভাবক।

অভিযোগে তারা বলেন, এক ব্যক্তি তাদের মেয়েদের ভুলিয়ে একটি বহুতল ভবনে নিয়ে যায়। ভবনটির সিঁড়িতে নেয়ার পর শিশু দুটি ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করলে ওই লোকটি পালিয়ে যায়।

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বরও পুলিশের কাছে একটি শিশুকে একইভাবে ভুলিয়ে নির্জনে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছিল।

তিন ঘটনার লক্ষণ একই রকম হওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়, সম্ভবত একজনই এসবের সঙ্গে জড়িত।

এরপর ঘটনার হোতাকে ধরার জন্য যেসব এলাকায় শিশু ধর্ষিত হয়েছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ।

এতে একজন ব্যক্তিকে একাধিকবার দেখতে পায় পুলিশ। তবে তার চেহারা স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছিল না। এরপর ওই এলাকার দোকানদার এবং ঘটনার শিকার শিশুদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তের চেহারার স্কেচ করে পুলিশ।

এরপর পুলিশ ওই স্কেচ নিয়ে ঘরে ঘরে যায়। এরপর গত শনিবার এক তল্লাশি অভিযানকালে স্কেচ দেখে সুনীলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ডিসিপি ওমবির সিং জানান, অভিযুক্ত সুনীলকে মানসিকভাবে অসুস্থ মনে হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন লাল জ্যাকেট পরে বালিকাদের ধর্ষণ করলে তিনি ধরা পড়বেন না। সূত্র: এবিপি ও হিন্দুস্তান টাইমস।