টানা পঞ্চম বছরের মতো বিশ্ব পণ্য বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি কমেছে। ২০০৮ সালের মন্দার পর সবচেয়ে কম বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে গেল ২০১৬ সালে। বিশ্বব্যাংকের নতুন এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু উচ্চ আয়ের দেশগুলোই নয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোরও বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি কমেছে। গ্লোবাল ট্রেড ওয়াচ : ট্রেড ডেভেলপমেন্ট ইন ২০১৬ শীর্ষক প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল প্রবৃদ্ধি এবং নিত্য পণ্যের দাম কম থাকাসহ নীতি অনিশ্চয়তার ফলে বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থা দুর্বল হয়েছে। ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী পণ্য ও সেবা বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ। আগের ২০১৫ সালে এই প্রবৃদ্ধি ছিলো ২ দশমিক ৭ শতাংশ।

ওয়াশিংটনস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে গতকাল প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গেল ২০১৬ সালে বিশ্বে পণ্যদ্রব্যে বাণিজ্য বেড়েছে মাত্র এক শতাংশ। আগের বছর ২০১৫ সালে বৃদ্ধি পেয়েছিল ২ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৪ সালে পণ্য দ্রব্যের বাণিজ্য বেড়েছিল ২ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ বিশ্ববাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি ক্রমশ আরো দুর্বল হচ্ছে। বিশ্বমন্দা পরিবর্তী সময়ে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর বাণিজ্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে সময় উন্নয়নশীল বিশ্বে এর আঘাত কম হলেও সম্প্রতি সময়ে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেবা বাণিজ্যের অবস্থা তুলনামূলক ভালো ছিল।

প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের উৎপাদনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বিশ্ব বাজার ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতার তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ৪০টি দেশের ১৩টি খাতের ১৫ বছরের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈশ্বিক মূল্য ব্যবস্থার সাথে যুক্ত হলে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে বিশ্ববাণিজ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ শতাংশ হারে।

বিশ্বমন্দার আগের সময়কালে অর্থাৎ ১৯৯৪ থেকে ২০০৮ সময় কালে গড়ে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ শতাংশ হারে। আলোচ্য সময়কালে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতাও গড়ে ১ শতাংশ হারে কম হয়েছে। প্রতিবেদনে উৎপাদনশীলতা কম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈশ্বিক মূল্য ব্যবস্থায় যুক্ত হয়ে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো সম্ভব।