ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম আন্ডারওয়ার্ল্ড। সম্ভাব্য প্রার্থীদের জন্য মাঠে সক্রিয় হয়েছে রাজধানীর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা। এদের বেশির ভাগই পলাতক ও কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সহযোগী। কোনো কোনো শীর্ষ সন্ত্রাসী কারাগার থেকেও নির্দেশনা দিচ্ছে। অর্থের বিনিময়ে এসব সন্ত্রাসী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও অস্ত্রের জোগান দিতেও ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে।
তবে তাদের দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপরতা শুরু করেছে। প্রার্থীদের সঙ্গে একাট্টা হয়ে কাজ করতে পারে এ ধরনের প্রায় ৫শ’ পেশাদার সন্ত্রাসীর তালিকা এখন তাদের হাতে। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে দু-একদিনের মধ্যে শুরু হতে পারে বিশেষ অভিযান।
সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের কারণে ঝুঁকিতেও আছেন অন্তত ৯০ প্রার্থী। তাদেরও তালিকাও হাতে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশেষ করে যেখানে একই দলের একাধিক প্রার্থী সেখানে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সুযোগ নিচ্ছে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমন সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ও র্যাবের পক্ষে বলা হয়েছে, সন্ত্রাস দমনে তারাও কঠোর। নির্বাচন নিয়ে কাজ করা গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছেন, এসব সন্ত্রাসীর হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আছে। তালিকায় নাম রয়েছে উত্তরার জুয়েল, তুরাগ ফুলবাড়িয়ার রাজু, সানি, বিজি প্রেস স্টাফ কোয়ার্টারের তরু, রহিম মেটাল এলাকার ফারুক, শাহীনবাগের শান্ত ও আল-আমিন, তেজগাঁওয়ের নরোদম সাহা ওরফে আসিফ ওরফে রবিন, তেজকুনিপাড়ার আতাউর রহমান আতা, ইন্দিরা রোডের হেনরি সরকার, মনিপুরী পাড়ার জয়দেব সিং, মগবাজার দিলু রোডের মনির হোসেন, মীরবাগের হাতকাটা রাব্বি, মধুবাগের অপু, মীরবাগের রাহাত হোসেন রকিব, রমনায় গ্রেনেড রাসেল, আলী, নয়াটোলার দেলোয়ার হোসেন দিলু, ফয়সল রহমান অভি, ঝিলপাড়ের দিলু, মধুবাগের বগা রনি, সাইফুল ইসলাম, গ্রিন রোডের রাজেশ হাসান পন্টু, মধুবাগের রাজীব ও হীরা, রমনা টিঅ্যান্ডটি কলোনির মুন্না।

ওয়ার্ডভিত্তিক তালিকায় দেখা গেছে, উত্তরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী কবির হাসান, জুয়েল, রাজু, সানি, বাপ্পি; দক্ষিণের ১ নম্বর ওয়ার্ডে তরুণ, শান্ত আল-আমিন ও ফারুক; দক্ষিণের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নরোধম সাহা ও আতাউর; দক্ষিণের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী হাতকাটা রাব্বী, তপন, অপু, হীরা, রাকিব, আলী, দেলোয়ার হোসেন, বগা রনি, অভি, তাহসিন, গিয়াস, রিপন, সাইফুল ইসলাম এবং দিলু সক্রিয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম যুগান্তরকে বলেন, কোনো প্রার্থীর সঙ্গে অপরাধী গোষ্ঠী বা সন্ত্রাসীদের যোগসূত্র পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিধান আছে। তিনি বলেন, কেউ কেউ কথিত আধিপত্যের জন্য সন্ত্রাসীদের হাতে রাখতে পারে। এসব সন্ত্রাসীকে তারা ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এ ধরনের উপযুক্ত তথ্য আমাদের কাছে এলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।