আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে ফৌজদারি মামলা, এমনকি দুর্নীতির মামলায়ও সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এসংক্রান্ত বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি আইন ২০১৮’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর তেজগাঁও কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের আগে পূর্বানুমোদনের এই বিধান রাখায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এটা বৈষম্যমূলক ও সাংবিধানিক চেতনার পরিপন্থী। এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ক্ষমতা ব্যাপকভাবে খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি হবে।

বহুল আলোচিত এ আইনে সরকারি কর্মচারীদের নানাভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তারের আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতির মতো দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রেও পূর্বানুমোদন লাগবে। অথচ এত দিন দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন হতো না। আইনটি পাস হওয়ার পর কোনো সরকারি কর্মচারীকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ, অবমাননা, মানহানি বা অন্য কোনো মামলা হলে তিনি সরকারি খরচে সেই মামলা পরিচালনা করতে পারবেন।

এ ছাড়া আগের খসড়া আইনে বিভিন্ন ধাপে পদোন্নতির জন্য লিখিত পরীক্ষার বিধান ছিল। এ বিধান নিয়ে তরুণ কর্মকর্তাদের আপত্তি ছিল। শেষ পর্যন্ত পদোন্নতি কিভাবে হবে তা বিধির ওপর ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বিধি দিয়ে পদোন্নতির বিধান করা হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সরকারি চাকরি আইনে চার্জশিট দাখিলের আগে কর্মচারীদের গ্রেপ্তার না করার যে বিধান রাখা হয়েছে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হবে এবং আদালতে টিকবে না বলে মনে করি। কারণ এর আগেও এই জাতীয় ধারা যুক্ত করা হয়েছিল এবং হাইকোর্ট তা বাতিল করেছেন। এবারও তাই হবে।’

খসড়া আইন অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীর ফৌজদারি মামলায় যদি মৃত্যুদণ্ড বা এক বছরের অধিক কারাদণ্ড হয়, তাহলে তার চাকরি চলে যাবে। কারাদণ্ড এক বছরের কম হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।