সন্তানদের জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি বিক্রি করতে চান ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা রামেশভাই নন্দওয়ানা। রামেশের তিন সন্তান। এর মধ্যে পাঁচ বছরের যোগিতার ওজন ৩৪ কেজি, তিন বছরের আনিশার ৪৮ কেজি আর মাত্র ১৮ মাসের হর্ষের ওজন ১৫ কেজি। এরা তিনজনই হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ওজনদার শিশু।
এই তিন শিশুর খাবার জোগাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাদের গরীব বাবা রমেশভাই নন্দওয়ানাকে। এভাবে যদি ওজন বাড়তে থাকে তাহলে এক সময় এই তিন শিশুর জীবন নিয়ে সংশয় দেখা দেতে পারে। আর তাই ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা রমেশ ভাই সন্তানদের চিকিৎসায় নিজের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যোগিত, আনিশা আর হর্ষ এক সপ্তাহে যে খাবার খায় তাতে দুটি পরিবারের অনায়সে এক মাস চলে যেতে পারে। পিচ্চি হর্ষের প্রতিদিন আট গ্লাস দুধ লাগে। তার বোন যোগিতা আর আনিশার লাগে আটটি মোটা রুটি, ২ কেজি চালের ভাত, তিন গামলা তরকারি, ছয় প্যাকেট চিপস, পাঁচ প্যাকেট বিস্কুট, এক ডজন কলা আর এক লিটার দুধ।
এই তিন শিশুর খাবার তৈরিতে তাদের মা প্রাগনা বেনকে (৩০) প্রায় সারাটা দিনই রান্নাঘরে কাটাতে হয়।
তিনি বলেন, ‘আমার দিন শুরু হয় ৩০টি রুটি এবং এক কেজি তরকারি রান্নার মধ্য দিয়ে। তারপর আরো খাবার প্রস্তুত করতে রান্না ঘরে ঢুকতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওদের ক্ষুধা কখনেই থামে না। খাবার না পেলে কান্নাকাটি শুরু করে। ওদের জন্য সবসময় আমাকে রান্না ঘরে থাকতে হয়।’
পেশায় দিনমজুর রমেশ ভাই জানান, জম্মের সময় যোগিতা কিন্তু মোটা ছিলো না। ওর স্বাস্থ্য ছিলো বেশ দুর্বল। ওজন ছিলো মাত্র দেড় কেজি। প্রাণ নিয়ে সংশয় দেখা দেয়ায় তাকে প্রচুর খাওয়ানো হতো। আর মাত্র এক বছরের মাথায় যোগিতার ওজন এসে ঠেকে ১২ কেজিতে। একই দৃশ্য ছিলো আনিশার বেলায়। জম্মের সময় ওর ওজন ছিলো কম। কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় ওদের ওজন দাড়ায় ১৫ কেজিতে। হর্ষের জম্মের সময়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়।
রমেশ বলেন, ‘আমি ওদের ক্ষুধার্ত রাখতে পারি না। আমার কাছে টাকা না থাকলে আমার ভাই ও বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করতে হয়। কিন্তু আমার সন্তানদের যখন খাওয়ার প্রয়োজন তখন তাদের খাবার যোগানের বিষয়টি আমি নিশ্চিত করি।’