আজ শুভ বড়দিন। বিশ্বের খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের দিন। ২ হাজার ১২ বছর আগে এই দিনে জেরুজালেমের বেথেলহেম শহরের এক গোয়ালঘরে কুমারী মাতা মেরির গর্ভে জন্ম নেন যিশু। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যিশু জন্ম নিয়েছিলেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টধর্মানুসারীরাও আজ আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন। আজ সরকারি ছুটির দিন। এ দিনে অনেক খ্রিস্টান পরিবার কেক তৈরি করে থাকে। এছাড়া সব পরিবারেই বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়। দেশের অনেক অঞ্চলে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের আসর বসে। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেকে বড়দিনকে বেছে নেন।
বড়দিন উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জায় (পবিত্র জপমালার গির্জা) গিয়ে দেখা যায়, বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন চলছে। গির্জা ও এর আশপাশে রঙিন বাতি জ্বালানোর প্রস্তুতি সবে শেষ হয়েছে। গির্জার ভেতর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। আলোকসজ্জায় দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। গির্জার মূল ফটকের বাইরে ছোটখাটো একটি মেলা বসেছে। মেলার দোকানগুলোয় বড়দিন ও খ্রিস্টীয় নতুন বছরের কার্ড, নানা রঙের মোমবাতি, সান্তা ক্লজের টুপি, জপমালা, ক্রিসমাস ট্রি, যিশু-মরিয়ম-যোসেফের মূর্তিসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হতে দেখা গেছে। গির্জার পাশের কবরস্থানে অনেককে মোমবাতি জ্বালাতে দেখা গেছে। আজ সকাল থেকে কয়েক দাফায় বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বড়দিনের পূর্বপ্রস্তুতির নানা আয়োজনে কয়েক দিন ধরেই সরগরম খ্রিস্টানপাড়াগুলো। উদ্বোধন করা হয়েছে প্রতীকী গোশালা, পাশাপাশি চলছে কীর্তন। বড়দিনের উৎসবকে ঘিরে আনন্দমুখর আয়োজনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই অভিজাত তারকাবহুল হোটেলগুলো। সোনারগাঁওসহ নামিদামি হোটেলগুলো সেজেছে রঙিন বাতি, ফুল, আর প্রতীকী ক্রিসমাস ট্রিতে। সেই সঙ্গে চলছে বড়দিনের গান-বাজনা।
শুভ বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাণী দিয়েছেন। বড়দিন উপলক্ষে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এখানে রয়েছে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা। বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সব সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, বড়দিন দেশের খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় করবে।