প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বৈধপথে আনতে প্রণোদনা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গাইডলাইনের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে। তাই তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর নগদ প্রণোদনা দেয়া উচিত। আমি মনে করি, ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত নগদ প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। এতে প্রবাসীরা বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহিত হবেন।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমি ওমানে গিয়ে দেখতে পেলাম একটি ব্যানারে লেখা রয়েছে- ‘এখানে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানো হয়।’ প্রকৃতপক্ষে দেশের বাইরে বিকাশের কোনো এজেন্ট নেই। এসব কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আসা কমছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বুধবার রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বিআইআইএসএস অডিটোরিয়ামে ‘মোবাইল ব্যাংকিং, ফিন্যান্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ইস্যু’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে এফবিসিসিআই ও ফ্রিডরিচ নিউম্যান স্ট্রিফটাং (এফএনএফ)। গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি সচিব শ্যামসুন্দর শিকদার।

গোলটেবিল বৈঠকে রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের আরোপিত বিধি-নিষেধের সমালোচনা করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে আরও একটু ভেবে দেখা দরকার।

এ বিষয়ে আরও চিন্তা করার সুযোগ আছে। দু-একজন খারাপ কাজ করলে তার শাস্তি সবাইকে দেয়া ঠিক হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো মনে হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হুন্ডি ও অপব্যবহার রোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সীমা কমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে ৫ হাজার টাকা বা তার বেশি নগদ অর্থ জমা বা উত্তোলনে গ্রাহককে পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ডের ফটোকপি প্রদর্শন করতে হচ্ছে, যা এজেন্ট তার রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন। রেজিস্টারে গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসই সংরক্ষণের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনের টাকা উত্তোলনের সীমা ২৫ হাজার থেকে কমিয়ে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জমা দেয়া যাবে দিনে ১৫ হাজার টাকা। মাসে ১০ বারের বেশি টাকা তোলা যাবে না। এক মাসে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা যাবে। তবে জমা দেয়া যাবে ২০ বার সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা।

বেসিস সভাপতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামসুন্দর শিকদার বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে খুব দ্রুতই একটি কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। যেহেতু আমিও সরকারি পর্য়ায়ে আছি, এ ব্যাপারে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার লিলা রাশিদ বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু বিকাশই ৮০ শতাংশ মার্কেট দখল করেছে। তাই এক্ষেত্রে আমরা প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরিতে গাইডলাইন তৈরি করছি।