মাইলস বিতর্ক যখন অনেকটা স্তিমিত, তখনই আবার সেটা উস্কে দিলেন ভারতীয় সংগীত শিল্পী শিলাজিত্। ফেসবুক পেজে লিখে ফেললেন খোলা চিঠি।

যেখানে নাম না করে ‘মাইলস’কেই তুলোধোনা করেছেন শিলাজিত্। যদিও তিনি বলছেন, ‘‘মাইল্স’ বলে একটি গানের দলের কথা শুনেছি। তাদের গান সেভাবে শুনিনি। কিন্তু রূপমকে (ইসলাম) যেভাবে, যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন দলের এক সদস্য, সেটা ভালো লাগেনি বলেই এই চিঠি। যাতে আওয়াজটা অনেক দূর যায়।’’

শিলাজিত্ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের গুণী শিল্পী বলেছেন যে, ভারতীয় শিল্পীরা ওদের থেকে অনেক বেশি অর্থ রোজগার করছেন, এবং যাদের নাম উনি নিয়েছেন বা যাদের জন্য গায়ে জ্বালা ধরেছে, তাদের ‘রেট’ দেখে বা শুনে এ বঙ্গের শিল্পীদের মধ্যেও অনেকের একটু হতাশা আছে বই কী’!

প্রসঙ্গত, ‘মাইলস’এর সদস্য শাফিন আহমেদ একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘স্থানীয় শিল্পীদের চেয়ে ভারতীয় শিল্পীরা ১০ থেকে ২০গুণ বেশি টাকা পান বাংলাদেশে। কোনো ভারতীয় শিল্পী তিন কোটি টাকা পেলে, কেন একজন স্থানীয় শিল্পীর হাতে কয়েক হাজার টাকা গুঁজে দেয়ার জন্য দর কষাকষি চলবে’? এখানেই আপত্তি শিলাজিতের।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পীবন্ধুর আর্তনাদটা বুঝতে পারছি। ভাষার ফেরে উনি, আমি, আরও অনেকেই কম অর্থ পাই। আমিও একজন ভারতীয় শিল্পী। কিন্তু যে সামান্য অর্থ এ দেশে পাই, বাংলাদেশে গান গাইতে গিয়ে তার চেয়েও কম অর্থ আমি পেয়েছি’। উল্লেখ করেছেন মাকসুদুল হকের কথাও (বাংলাদেশী ব্যান্ড ‘এলআরবি’র সদস্য)। যার অনুরোধেই বাংলাদেশের একটি রেডিও এবং টেলিভিশন চ্যানেলে গাইতে এসেছিলেন শিলাজিত্।

তিনি বলেছেন, ‘ওর কাছেও শুনেছি ভারতীয় শিল্পীদের জন্য কত টাকা বাংলাদেশী মানুষই জোগাড় করেছেন। অদ্ভুত, আমি তো একজন ভারতীয় শিল্পী। আমাকে আরেকজন ভারতীয় শিল্পীর জন্য ফল ভোগ করতে হয়েছে। কোটি কোটি টাকা নাকি ‘ভারতীয়’ শিল্পীরা নিয়ে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে! তাই কর চাপানো হয়েছে!

এমন কর চাপানো হয়েছে, যে আমাদের মতো বাংলা গান গাওয়া ভারতীয়দের টাকা দেয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে! হিন্দি গান গাওয়া শিল্পীদের ওপর চাপানো করের পার্সেন্টেজের জন্য, বোঝো’!

প্রসঙ্গত, শিলাজিত্ তার চিঠির ওই অংশে বলেছেন, হিন্দি ভাষায় গান করা শিল্পী এবং প্রাদেশিক ভাষায় গান করা শিল্পীদের মধ্যেকার ফারাকের কথা। বলেছেন, ‘যারা ইংরেজি ভাষায় গান করেন, তাদের পৃথিবীটা অনেক বড় হওয়ার সুবাদে তারা আরও বেশি অর্থ পান’।

পোস্টের ওই অংশটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আরে, দীপিকা পাড়ুকোন যাচ্ছে, সোনু নিগম যাচ্ছে ওদের দেশে। ওদের পেছনে টাকা খরচ করে। বাংলা গান করা শিল্পীদের পেছনে কোথায় টাকা খরচ করে বলুন তো!’’

পোস্টে শিলাজিতের ডাক, ‘আমাদের একটা রাজ্য, আপনাদের একটা দেশ…আসুন না, দুই বাংলা মিলিয়ে এমন কিছু কাজ করি বাংলা ভাষায়, যাতে আমরা আমাদের দর বাড়াতে পারি…বাজি রাখতে পারি, আমাদের এই রাজ্যে একজন বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠিত শিল্পী যে কোনও দিনই এ রাজ্যের কোনও প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর চেয়ে বেশি দর পায়…কদরও…দু’দেশেরই সমস্যা আছে, যন্ত্রণা আছে..সেগুলো জেনারেলাইজ না করে আসুন গান গাই। বাংলার জয় হোক’।