বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় আবারও পরিবর্তন আসছে। বঙ্গভবনে আজ মঙ্গলবার ছয়জন নতুন মন্ত্রী শপথ নেবেন। সচিবালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে সম্ভাব্য ছয় নতুন মন্ত্রীর জন্য ৬টি গাড়ি প্রস্তুত করা হয়েছে। অন্যদিকে বঙ্গভবনে শপথের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের সঙ্গে আজ সকালে যোগাযোগ করা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। মন্ত্রিসভার কলেবর বড় করা ছাড়াও বর্তমান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পূর্ণ মন্ত্রী করাসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দফতর পরিবর্তন করা হতে পারে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন বিতর্কিত দুই মন্ত্রী।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিমের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। গত বছর ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। এরপর প্রথমবারের মতো ২৬ ফেব্র“য়ারি এএইচ মাহমুদ আলী মন্ত্রী ও নজরুল ইসলাম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তারপর আর মন্ত্রিসভার কলেবর বাড়েনি। এর মধ্যে বিদায় নিতে হয়েছে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে। সর্বশেষ এ মাসে দফতরবিহীন করা হয়েছে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে।
সরকারের উচ্চ পর্যায় সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের মন্ত্রণালয় চালানোর দক্ষতায় সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য এই দুই প্রতিমন্ত্রীকে পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা দিতে চাইলে তাদের নতুন করে শপথ পড়াতে হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আপাতত মন্ত্রিসভার সমপ্রসারণ হতে যাচ্ছে। কেউ বাদ পড়ছেন না। এ তালিকায় কয়েক জনের নাম রয়েছে। শপথ নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম বিএসসি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য তারানা হালিমকে গতকাল রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন করে বলা হয়েছে, আজ বিকেল ৩টার পর বাসায় অবস্থানের জন্য। ইফতারের আগে শপথের বিষয়টিও তাদেরকে জানানো হয়েছে।
এদিকে সম্ভাব্য কয়েকজন সংসদ সদস্য মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন বলে আলোচনায় রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন- সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ, দিনাজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস।
সম্ভাব্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে নিয়েও উচ্চ মহলে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাদের ওপর বিরক্ত হলেও এখনই তাদের সরাতে চান না। এ দুই মন্ত্রী সম্পর্কে বলা হয়েছে, সুখে-দুঃখে তারা সব সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গেই আছেন। তাই তাদেরকে সরানোর চিন্তা করা হচ্ছে না। অন্য বিতর্কিত মন্ত্রীদেরও আপাতত সরানো হচ্ছে না। তবে বিতর্কিত মন্ত্রীদের মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী দেয়া হবে। এরপর সুযোগ বুঝে মন্ত্রিসভা থেকে তাদের বাদ দেয়া হবে। মন্ত্রিসভার বর্তমান সদস্যদের তিনি অন্তত দুই বছর কাজ করার সুযোগ দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। আগামী জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় বড় রকমের পরিবর্তন আসতে পারে বলেও জানা গেছে।