আল্পস পর্বতমালায় জার্মানির যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় গতকাল বুধবার উদ্ধারকাজ আবার শুরু হয়। ছয় হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত দুর্ঘটনার স্থানটি প্রত্যন্ত হওয়ায় উদ্ধার অভিযান শেষ করতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। গতকালই ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা ছিল জার্মানি, ফ্রান্স ও স্পেনের শীর্ষ নেতাদের। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির।
জার্মানির বিমান পরিবহন সংস্থা জার্মানউইংসের এ-৩২০ এয়ারবাসটি ১৫০ আরোহী নিয়ে স্পেনের বার্সেলোনা থেকে জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরে যাওয়ার পথে ফ্রান্সের বার্সালোনেত্তি এলাকায় পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়।
‘সন্ত্রাসী হামলা নয়’: ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেরনা ক্যাজনোভ গতকাল বলেন, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় সম্ভাব্য সব ধরনের কারণই খতিয়ে দেখতে হবে। তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এটা কোনো সন্ত্রাসী হামলা নয় বলেই মনে হয়েছে।
৬৭ জনই জার্মান: কর্মকর্তাদের ধারণা, উড়োজাহাজটির ১৪৪ জন যাত্রীর মধ্যে ৬৭ জনই জার্মান নাগরিক। এ ছাড়া ছিল স্পেনের ৪০ জন নাগরিক। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কলাম্বিয়া, তুরস্ক, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য ও আর্জেন্টিনার নাগরিকেরাও উড়োজাহাজটিতে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণ চলছে: যে এলাকাটিতে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে, সেখানে যাওয়ার উপায় মাত্র দুটি: হেলিকপ্টারে, না হয় পায়ে হেঁটে। কুয়াশাসহ প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে শত শত উদ্ধারকর্মী গতকাল ঘটনাস্থলে বড় ধরনের তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা উড়োজাহাজটির একটি ‘ব্ল্যাকবক্স’ নিয়ে গবেষণায় বসেন। ককপিটের ব্ল্যাকবক্সটি বিধ্বস্ত হওয়ার দিনই পাওয়া গেছে। ভালো আবহাওয়া সত্ত্বেও বিমানটি কেন বিধ্বস্ত হলো, তার কিনারা হতে পারে এর তথ্য বিশ্লেষণ করে।
উড়োজাহাজ সম্পূর্ণ ধ্বংস: গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো মরদেহ বা উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার না হলেও ঘটনাস্থলের অবস্থা জানা গেছে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। আকাশযানে ঘটনাস্থল চক্কর দিয়ে আসা একজন স্থানীয় পার্লামেন্ট সদস্য বলেন, উড়োজাহাজটি ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলটিকে ‘ভয়ংকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। ঘটনা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত লাশের যে সবচেয়ে বড় অংশটি শনাক্ত করতে পেরেছি, সেটি একটি ব্রিফকেসের চেয়ে বড় হবে না।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদ, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাহয়ের গতকাল স্থানীয় সময় দুপুরে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল। আর উড়োজাহাজটির আরোহীদের স্বজনদের ঘটনাস্থলের কাছের একটি গ্রামে আসার কথা ছিল।
তথ্যঃ প্রথম আলো