বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ভারতের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ রিলায়েন্সওআদানি। দেশীয় কোম্পানি পিডিবির সঙ্গে যৌথভাবে এই বিনিয়োগ করবে। এজন্য শনিবার ঢাকায় পিডিবির সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে এমওইউ স্বাক্ষর করবে রিলায়েন্স ও আদানি গ্রুপ।

সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদেশী বিনিয়োগ উত্সাহিত করছে সরকার। রিলায়েন্স, আদানির মতো বড় ভারতীয় কোম্পানির আগ্রহ ইতিবাচক হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে বিদ্যুৎ বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। দুই শিল্প গ্রুপের কর্মকর্তারা বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

ভারতের বেসরকারি খাতের বৃহৎ তিন শিল্প গ্রুপের একটি রিলায়েন্স। বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও টেলিযোগাযোগসহ আর্থিক খাতে গ্রুপটির ব্যবসা রয়েছে। ভারত ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ রয়েছে এ গ্রুপের। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে প্রাথমিকভাবে দেড় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে তারা। পরবর্তীতে এটি ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায় রিলায়েন্স।
জানা গেছে, এলএনজিভিত্তিক বিদ্যু কেন্দ্র নির্মাণে মহেশখালী ও মেঘনাঘাটের দুটি স্থানকে বিবেচনায় নিয়েছে রিলায়েন্স। প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন হলে এটিই হবে এলএনজিভিত্তিক দেশের প্রথম বিদ্যু কেন্দ্র।
অন্যদিকে আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ, কয়লা খনি ও বন্দর পরিচালনায় বেসরকারি খাতে ভারতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এককভাবে ভারতে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে আদানি। বাংলাদেশেও ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে গ্রুপটি।

আদানি গ্রুপ কক্সবাজারের মহেশখালীতে বিদ্যুেকন্দ্রটি স্থাপন করতে চায়। এখানে ৮০০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট থাকবে। এজন্য যৌথ কোম্পানি গঠনেরও প্রস্তাব দিয়েছে আদানি। তাতে বিদ্যুেকন্দ্রটির ৬০ শতাংশ মালিকানা আদানির ও ৩০ শতাংশ বাংলাদেশ সরকারের হাতে থাকার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ প্রস্তাবটি যাচাই করে শনিবার সমঝোতা স্বারক চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে।

 সূত্র জানায়, আদানি গ্রুপ ভারতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করতেও আগ্রহী।রিলায়েন্সও ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার হাইড্রো বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এসব কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছে।

তবে সরকার ভারতীয় বড় কোম্পানির বিনিয়োগকে স্বাগত জানালেও দেশীয় উদ্যোক্তারা মনে এর বিরোধীতা করছেন। তারা বলছেন, এককভাবে ভারতীয় কোম্পানির বিনিয়োগে দেশ উপকৃত হবে না। তাদের দাবি, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা থাকলেও আর্থিক বিবেচনায় রিলায়েন্স, আদানির মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার মতো সক্ষমতা নেই দেশীয় উদ্যোক্তাদের।তাই যৌথ বিনিয়োগ হলে নানাভাবে লাভবান হবে দেশ। বড় কোম্পানির সঙ্গে কাজ করলে দক্ষ জনবলও গড়ে উঠবে।