জনপ্রিয়তার শিখরে থাকা সিনেমাটির প্রথম পর্বটি মুক্তি পায় ২০০১ সালে। মুক্তির পরপরই বিশ্বজুড়ে সিনেমাটি উঠে আসে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
সিনেমাটির মূল নায়ক পল ওয়াকার আর নেই কিন্তু তার শেষ স্মৃতি ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’-এর সপ্তম কিস্তি ‘ফিউরিয়াস সেভেন’ মুক্তি পেয়েছে ক’দিন আগেই। ঢাকার সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টারসহ সারা বিশ্বে চলছে সিনেমাটি। জানাচ্ছেন প্রাঞ্জল সেলিম
সিরিজের সপ্তম কিস্তি হলেও গল্পটি মূলত শুরু হবে তৃতীয় কিস্তি টোকিও ড্রিফটের পর থেকে। ছবিটির এবারের গল্প প্রতিশোধের। ডমিনিক (ভিন ডিজেল), ব্রায়ান (পল ওয়াকার) এবং তাদের সহযোগীরা ‘গডস আই’ নামে একটি ডিভাইস হাতে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ডিভাইসটির নকশা করেছেন হ্যাকার রামসে (ইমানুয়েল)। কিন্তু এটি ছিল ডেকার্ড শর (জেসন স্ট্যাথাম) সাজানো নাটক। শর ছোট ভাই মারা পড়েছিল ডমিনিকদের হাতে। তারই প্রতিশোধ নিতে চায় সে। এই লড়াই চলতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আজারবাইজান, দুবাই ও লস অ্যাঞ্জেলেসে। ফিউরিয়াস সেভেনে রয়েছে দুর্দান্ত সব স্টান্ট। আকাশ থেকে গাড়ি পড়া দিয়ে শুরু করে পুরো সিনেমাজুড়ে রয়েছে রেসিং এবং অ্যাকশনের অপূর্ব সমন্বয়। এক কথায় পুরো টান টান উত্তেজনার সিনেমা।
এতে অভিনয় করেছেন ভিন ডিজেল, পল ওয়াকার, ডোয়াইন জনসন, জর্ডানা ব্রিউস্টা, মিশেল রড্রিগেজ আর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছেন জেসন স্ট্যাথাম। এর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত তিনটি চলচ্চিত্রের কাহিনীকাল দেখানো হয়েছিল ‘টু ফাস্ট টু ফিউরিয়াস’ (২০০৩) ও ‘দ্য ফাস্ট অ্যান্ড দ্য ফিউরিয়াস :টোকিও ড্রিফট’ (২০০৬) চলচ্চিত্র দুটির অন্তর্বর্তীকালীন ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে।
‘ফিউরিয়াস ৭’ পল ওয়াকার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র। ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পল ওয়াকার নিহত হওয়ার সময় চলচ্চিত্রের মাত্র অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। তার মৃত্যুতে ছবির ভবিষ্যত্ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন থেমে থাকার পর, পরবর্তীতে চিত্রনাট্য পুনর্লিখিত হয় এবং পল ওয়াকারের দুই ভাই ক্যালেব ও কোডি ওয়াকার পলের অংশের শুটিংয়ে অংশ নেন।
ক্রিস মরগ্যানের চিত্রনাট্যে ছবিটি পরিচালনা করেছেন জেমস ওয়ান। তুমুল জনপ্রিয় হলিউডের ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস সিরিজের সপ্তম ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস ৭’ নামে। কিন্তু পরবর্তীতে ছবির নাম পাল্টে রাখা হয়েছে ‘ফিউরিয়াস ৭’।
‘ফিউরিয়াস ৭’ ছবির ট্রেলার প্রকাশ করা হয়েছিল ১ নভেম্বর। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ইউনিভার্সেল স্টুডিওতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিল ছবির দুই অভিনয়শিল্পী ভিন ডিজেল ও মিশেল রড্রিগজ।
শুরুর মূল নায়ক পল ওয়াকার এবং ভিন ডিজেল মিলে সিনেমাটিকে এগিয়ে নেন এক নতুন মাত্রায়। তাদের একসাথে অভিনয় এবং রেসিং অ্যাকশনগুলোর জন্য সিনেমাটি উঠে আসে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এরপর পরবর্তীতে যতগুলো পর্বই করা হয়েছে কোনো পর্বেরই জনপ্রিয়তা কমেনি। বরং প্রতি পর্বের সাথে সাথে জনপ্রিয়তার মাত্রা বেড়েছে ধাপে ধাপে। একসময় তাদের সাথে যোগ দেন ‘দ্য রক’ খ্যাত ডোয়াইন জনসন। সিনেমাটিতে নতুন এক মাত্রা যোগ করেন তিনি।
পরবর্তীতে পল ওয়াকারের মৃত্যুতে সিনেমাটির ভবিষ্যত্ অনিশ্চিত হলেও থেমে থাকেনি টিম। তারা এগিয়ে নিয়ে যান সিনেমাটিকে। পল ওয়াকারের শেষ স্মৃতি হিসেবে সিনেমাটির প্রতি সবার কিছুটা বাড়তি আকর্ষণ রয়েছে। বলা যায়, সব মিলিয়ে সিনেমাটি বেশ ভালো একটি অবস্থান করে নিয়েছে হলিউডি সিনেমা ইতিহাসে।