দীর্ঘদিন পরে হলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কট্টর দাবি থেকে অবশেষে পিছু হটলেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এত জ্বালাও-পোড়াও, রক্তপাত, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, ধ্বংসাত্মক আন্দোলনে এত এত সম্পদ নষ্টের পর অবশেষে তিনি নতি স্বীকার করলেন। এখন বলছেন, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে এমন নয়। যে নামেই হোক না কেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তার ভাষায়, আমি বলবো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। যে নামেই হোক একটি নিরপক্ষে সরকারের অধীনে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। শনিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতাদের সাথে গুলশানে তার কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, গত ৩টি সিটি নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে, ক্ষমতা থেকে গেলে সহসাই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই নির্বাচন দিতে চায় না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ জানে ক্ষমতা থেকে গেলে তারা আর সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সে জন্য তারা নির্বাচন দিতে চায় না। তিনি অভিযোগ করেন, তাই সরকার একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায়। তিনি আরও বলেন, জোর করে র‌্যাব-পুলিশ দিয়ে বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। জোর করে ক্ষমতায় থাকলে এর পরিণতি ভালো হয় না। আওয়ামী লীগ আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য বিএনপিসহ সব দলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিএনপিকে শেষ করা যাবে না। বিএনপির রুট মানুষের মনে। যত দিন এ রুট থাকবে তত দিন বিএনপি টিকে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, দেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বন্ধ। বিরোধী পক্ষকে মিটিং মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশকে কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। এতে শুধু বিএনপি বা ২০ দলের নয়, সারা দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সদস্যদের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এ আইনজীবীরাও নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু কিন্তু যারা দেশের ক্ষমতায়, তারাই অনির্বাচিত। তারা দেশকে শেষ করে দিচ্ছে।