তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের বিরুদ্ধে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে বিক্ষোভ করেছেন প্রায় ৩০ হাজার কুর্দি। তারা তুরস্কের নাগরিক। কুর্দি নববর্ষ সামনে। সে উপলক্ষে জার্মানির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কুর্দিরা যোগ দেন ওই বিক্ষোভে। এতে তারা তুরস্কে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অসীম মাত্রায় বৃদ্ধি করা নিয়ে আগামী মাসের গণভোটে ‘না’ ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তুরস্কে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তুরস্কে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) প্রতীক হাতে অনেককে দেখা যায় ওই বিক্ষোভে। এমন বিক্ষোভ সমাবেশের নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। তারা বলেছে, এমন বিক্ষোভ অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি এমন বিক্ষোভ অনুষ্ঠানে অনুমতি দেয়ার জন্য তারা জার্মানিকে ভন্ডামি বলে আখ্যায়িত করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানি ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ, তুরস্কে গণভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাতে দু’সপ্তাহ আগে তুরস্কের মন্ত্রীদের অনুমতি দেয় নি জার্মানি। পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুকে বহনকারী বিমান অবতরণ করতে দেয় নি। বহিষ্কার করা হয়েছে আরও একজন তুর্কি মন্ত্রীকে। এ ঘটনায় জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কে টান টান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে নেদারল্যান্ডসে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের কূটনীতিকদের জন্য তুরস্কের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জার্মানি তুরস্কের মন্ত্রীদের র্যালি করতে না দিলেও প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে র্যালিতে অনুমতি দিয়েছে। এতে আরেক দফা ক্ষুব্ধ তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, যখন নিজেদের নাগরিকদের র্যালিতে তুরস্কের মন্ত্রী ও এমপিদের যোগ দিতে বাধা দেয়া হয় তখন পিকেকে’র প্রতীক ও স্লোগান নিয়ে র্যালি অগ্রহণযোগ্য। আমরা ইউরোপের দেশগুলোকে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ১৬ই এপ্রিল (গণভোটে) সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে তুর্কি জনগণ, ইউরোপ নয়। ওদিকে শনিবারে ফ্রাঙ্কফুর্টের র্যালিকে শান্তিপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছেন জার্মান পুলিশের এক মুখপাত্র। বলা হয়েছে, ওই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অনেকের হাতে ছিল পিকেকে’র ব্যানার। উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে এ দলটি বিদ্রোহ শুরু করে। তারপর থেকে তুরস্কে নিহত হয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র এ সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আগামী ১৬ই এপ্রিল তুরস্কে গণভোট। প্রেসিডেন্টকে অসীম ক্ষমতা দেয়া হবে কিনা সে প্রশ্নে এ ভোট। এতে বৈধ ভোটার এমন প্রায় ১৪ লাখ তুর্কি নাগরিক বসবাস করেন জার্মানিতে। গত সোমবার জার্মান বিরোধিতার সুর জোরালো করেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলকে সন্ত্রাসীদের সমর্থনকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। পাশাপাশি তিনি জার্মানিকে ‘নাৎসী’ চর্চাকারী হিসেবেও অভিহিত করেন।