এবার সিলেকশনে নয়, ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। এ জন্য কাউন্সিলস্থল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সারাদেশ থেকে আগত প্রায় আড়াই হাজার কাউন্সিলর প্রত্যক্ষ ভোটে অংশ নেবেন এবং নির্বাচিত করবেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে এই নির্বাচনকে অনেকটা আইওয়াশ বলেই মনে করছেন অনেকে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পছন্দের ভিত্তিতে নির্ধারণ করে দেয়া নেতৃত্বই ছাত্রলীগের দায়িত্ব পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সংগঠনের ২৮তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার জানিয়েছেন, কোনো সিলেকটেড কমিটি নয়, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবারের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে। তার এ ঘোষণার পরপরই নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এদিকে ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়েই ভোটাভুটি হবে। নির্বাচিত সভাপতি-সম্পাদক পরবর্তীতে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবেন।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে দু’টি প্যানেল। এর মধ্যে একটি প্যানেল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার বলয়ের এবং অপর প্যানেলটি সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান রিপন বলয়ের।

লিয়াকত বলয় থেকে সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন ছাত্রলীগের বর্তমান পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞানের ছাত্র সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রলীগের বর্তমান সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন।

অপরদিকে রিপন বলয় থেকে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিপ্লব হাসান পলাশ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী যুগ্ম-সম্পাদক শাহ আলম সাদ্দাম।

গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে রিপন বলয়ের প্যানেলটি যে কোনো সময় প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারে। যদি এ গুঞ্জন সত্য হয় তবে লিয়াকত বলয়ের প্যানেলটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবে।

যে প্রক্রিয়াতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশ, মত, সমর্থন ও পছন্দের ভিত্তিতে নির্ধারণ করে দেয়া নেতৃত্বই ছাত্রলীগের দায়িত্ব পাবেন বলে মনে করছেন অনেকে। ‘নির্বাচন’কে অনেকটা আইওয়াশ বলেই মনে করছেন তারা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বিস্তৃত এ সংগঠনটিতে কোনোভাবে কর্তৃত্ব খর্ব হোক সেটি নিশ্চয় চাইবেন না শেখ হাসিনা। নিজের পছন্দসই, অনুগত ও বিশ্বস্ত নেতৃত্বের হাতে ছাত্রলীগের দায়িত্ব দিতে না পারলে দলের জন্য যেমন ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি নিরঙ্কুশ আনুগত্য খর্ব হওয়ারও সম্ভাবনা থেকে যায়। ফলে সে ঝুঁকি নিশ্চয় শেখ হাসিনা নেবেন না-এমনই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।