বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে বৈষম্য রয়েছে, তা-ই বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের পথে অন্যতম অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইউরোপে শেষ সফরে গতকাল বুধবার গ্রিসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গ্রিস থেকে জার্মানির উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার আগে ওবামা বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি এবং গণতন্ত্রের সামনে যে বড় বাধাগুলো রয়েছে, বৈষম্য সেগুলোর একটি। যখন আমরা দেখি জনগণ, অভিজাত ব্যক্তিরা আর ধনাঢ্য করপোরেশনগুলো আপাতদৃশ্যে ভিন্ন ভিন্ন আইনের আওতায় চলছে, কর ফাঁকির ঘটনা ঘটছে, তা অবিচারের চিত্রই ফুটিয়ে তোলে।’ তিনি বলেন, বিশ্বায়ন বহু অর্থনৈতিক সুবিধার সৃষ্টি করেছে, কিন্তু ক্রমবর্ধমান বৈষম্য দূর করতে এই অগ্রযাত্রায় কিছু সংশোধনীর প্রয়োজন রয়েছে।

বক্তৃতায় ওবামা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে (ব্রেক্সিট) যুক্তরাজ্যবাসীর গণভোট কিংবা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অপ্রত্যাশিত’ বিজয়ের প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বায়নের পৃথিবী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অনুধাবন করা যায়… তবে প্রযুক্তির প্রকৃতির বিচারে আমি মনে করি, আমরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হতে পারব না।’
এর আগে গত মঙ্গলবার ওবামা বলেন, মার্কিন নেতৃত্বে ন্যাটো জোট যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া শক্তিশালী এবং একতাবদ্ধ ইউরোপও আমেরিকা ও বাকি বিশ্বের জন্য ভালো ছিল। তিনি বলেন, ‘ইউরোপে বিভক্তির সূচনা থেকে কী কী ঘটেছে, আমরা জানি। বিংশ শতাব্দী ছিল রক্তঝরা শতক।’

গ্রিস সরকার ওবামাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেও রাজধানীতেই মার্কিন ‘সাম্রাজ্যবাদ’কে নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। এ সময় ওবামাকে ‘অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি’ বলেও স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা। গত মঙ্গলবার এই বিক্ষোভকারীরা রাজধানী এথেন্সের কেন্দ্রে হাজির হলে পুলিশ স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে।