বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা মামলায়’ সাজা দিয়ে জেলে পাঠানো হলে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্বাচন দেয়া হলে দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। দেশপ্রেমিক কোনো দল এ নির্বাচনে অংশ নেবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে হতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণমূলক ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হতে হবে। এজন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকারে নির্বাচন বরাবরই অংশ নিয়েছি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাব কী যাব না, সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে সেই সময় কোন ধরনের সরকার থাকছে, নির্বাচন কমিশনের কী ভূমিকা থাকে তার ওপর।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকালীন সরকারের সময় নিরপেক্ষ সরকার চাই। যে সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে, নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে ‘দলীয় ব্যক্তি’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নুরুল হুদা ছাত্রজীবনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এমনকি নেতা ছিলেন। পরে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে তিনি চাকরিও হারিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘চিহ্নিত একজন আওয়ামী লীগার হিসেবে সিইসির নিজের পরিচয়ও আছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে আওয়ামী লীগের প্রচারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এসবের সব প্রমাণ আছে। একজন দলীয় মানুষ সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাই। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে ফাঁদ পেতেছে ও নীলনকশা তৈরি করেছে, সেই নীলনকশার মধ্য দিয়ে কী নির্বাচন হবে? সেই নির্বাচন কখনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।’

ড. ইউনূসকে দেশের গর্ব মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সারা পৃথিবী তাকে সম্মান দিচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও তাকে বিশেষভাবে সম্মাননা জানিয়েছে। জনগণের মৌলিক কিছু বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করছেন। এই জন্য সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছেন।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি তাকে (ড. ইউনূস) ব্যক্তিগতভাবে শত্রু চিহ্নিত করেছেন। কারণ, লোকে বলে- নোবেল পুরস্কার নাকি আপনার প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ড. ইউনূস বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছেন।’

ডিআরইউ’র সাগর-রুনী মিলানয়তনে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সহায়ক সরকারের দাবি’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে ২০-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (এনপিপি)।

দলটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন- জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।