শনিবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহরটির তলদেশ দক্ষিণ দিকে কয়েক মিটার সরে গেছে। কিন্তু হিমালয়ের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতায় সম্ভবত কোনো পরিবর্তন হয়নি। যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন গবেষক গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
ভূমিকম্পের পর পৃথিবীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শব্দতরঙ্গ থেকে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেমস জ্যাকসন বলেন, কাঠমান্ডু দক্ষিণ দিকে ১০ ফুট (তিন মিটার) সরে গিয়ে থাকতে পারে।
জ্যাকসনের বিশ্লেষণের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌতবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান স্যান্ডি স্টিসির দেওয়া তথ্যের মিল রয়েছে। তিনি বলেন, ভূমিকম্পটি সম্ভবত ‘হিমালয়ান থ্রাস্ট ফল্টে’ হয়েছিল। ওই প্লেট সীমানা সঞ্চারণশীল ভারতীয় উপমহাদেশকে ইউরেশিয়া থেকে পৃথক করেছে। ফল্টটি উত্তর-উত্তর-পূর্বে প্রায় ১০ ডিগ্রি দেবে যায়। আর ফল্ট এলাকায় আপেক্ষিক সঞ্চারণ হয়েছে তিন মিটার, কাঠমান্ডুর ঠিক উত্তরে।
দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝখানে ফল্টটির (চ্যুতি) অবস্থান, যার একটি ভারতে। এটি এশিয়া ও ইউরোপজুড়ে অবস্থিত একটি প্লেটকে উত্তর দিকে প্রতিবছর দুই সেন্টিমিটার (দশমিক আট ইঞ্চি) হারে সরিয়ে দিচ্ছে। যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরিত্রীবিদ্যা বিভাগের বিশেষজ্ঞ মার্ক অ্যালেন বলেন, ফল্টের ওপরের পাথরগুলো তলদেশের পাথরের চেয়ে দক্ষিণে সরে গেছে। এতে ওই অঞ্চলে পৃথিবীর আবরণ সামগ্রিকভাবে সংকুচিত হয়েছে। তাই বলা যায়, কাঠমান্ডু তিন মিটার সরে নতুন অবস্থানে গেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমালয় পর্বতমালা প্রত্যক্ষভাবে একই ফল্টলাইনের ওপরে অবস্থিত না হওয়ায় এভারেস্টের উচ্চতায় কোনো পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার যে ভূমিকম্পটি গত শনিবার নেপালে আঘাত হানে, তা ছিল দেশটির অন্তত ৮০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ। এতে অন্তত ৪ হাজার ৩০০ মানুষ প্রাণ হারায়। ধ্বংস হয় ঘরবাড়িসহ বহু স্থাপনা।