Home Hot News Today এবার মঙ্গলের জন্য ড্রোন

এবার মঙ্গলের জন্য ড্রোন

লাল গ্রহ মঙ্গলের পৃষ্ঠের মোট আয়তন প্রায় পাঁচ কোটি ৬০ লাখ বর্গমাইল। এই দীর্ঘ অঞ্চলে মানুষের সর্বোচ্চ অর্জন বলতে রোবটযানের ৪০ মাইল ভ্রমণ। এ ছাড়া গ্রহটিকে কেন্দ্র করে ঘুরছে মানুষের তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহ এমআরও। এর মাধ্যমে গৃহটির পৃষ্ঠ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া গেলেও কয়েক কোটি বর্গমাইলের ভূ-পৃষ্ঠ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান এখনো অস্পষ্ট।

বর্তমানে ভূপৃষ্ঠ নিয়ে গবেষণায় অহরহই ব্যবহার হয় চালকবিহীন বিমান ড্রোন। মঙ্গলপৃষ্ঠের তথ্য জানতেও এটি সহায়ক হতে পারে। এই লক্ষ্যেই মঙ্গলের জন্য বিশেষভাবে ড্রোন তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। নাসা জানিয়েছে, মঙ্গলের পৃষ্ঠ ও জলবায়ুসহ নানা বিষয়ে দ্রুত তথ্য আহরণের একটি কার্যকর যন্ত্র হতে পারে ড্রোন।

জার্মান গবেষক লুডউইগ প্রানডিটলের নামানুসারে মঙ্গলের নাসার তৈরি ড্রোনটির নাম দেওয়া হয়েছে প্রানডিটল-এম। বর্তমানে এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এটি মঙ্গলে পাঠানো হবে।

মানুষ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ওড়ার যন্ত্র তৈরিতে বেশ পারদর্শী হলেও অন্য গ্রহের ক্ষেত্রে একবারেই নবিশ বলা চলে। নাসার মতে, অন্যগ্রহের বায়ুমণ্ডল ও অভিকর্ষণ ত্বরণের ভিন্নতা সেই গ্রহের জন্য মানুষের উড়ন্ত যান তৈরির সবচেয়ে বড় বাধা।

পপুলার সায়েন্স জানায়, এর আগেও মঙ্গলের জন্য উড়ন্তযান তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল নাসা। এমনই একটি প্রকল্পের ফসল ছিল এআরইএস নামক উড়োজাহাজ। এবারের প্রানডিটল-এম তৈরি হয়েছে ওই উড়োজাহাজের আদলে। দুটি উড়ন্ত যানেরই পাখা বেশ প্রশস্ত।

মঙ্গলের মতো হালকা বায়ুমণ্ডলের প্রানডিটল-এম ড্রোন চালানোর পরিকল্পনা করছে নাসা। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বেলুনের মাধ্যমে পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর এক লাখ ফুট উচ্চতায় নিয়ে ড্রোনটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। নাসা জানিয়েছে, প্রানডিটল-এম ড্রোনটির ওজন দেড় কেজিরও কম। মঙ্গলের এই ওজন কমে হবে মাত্র এক কেজি। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা হবে ড্রোনটির ওড়ার ক্ষমতা। পরবর্তীতে ড্রোনটির সঙ্গে ক্যামেরাসহ বিভিন্ন যন্ত্র যুক্ত করে ওজন বহন ক্ষমতার পরীক্ষার চালানো হবে। আর সবশেষে পুরোপুরি মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের ড্রোনটির ক্ষমতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে একে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে চার লাখ ৫০ হাজার ফিট ওপরে ওড়ানো হবে।

নাসা মনে করে, ভবিষ্যতে প্রানডিটল-এমের মতো ড্রোনগুলো মঙ্গলের ওপর দিয়ে ঘুরে বেড়াবে এবং এর পৃষ্ঠ ও জলবায়ু নিয়ে তথ্য পাঠাবে। তখন মঙ্গল হবে ড্রোনেরই রাজত্ব, যা চলবে অন্তত মানুষ সেখানে পৌঁছা পর্যন্ত।