একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দেড় বছর। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের আগে আর একটি মাত্র পূর্ণ অর্থবছর (২০১৭-১৮) পাচ্ছে। তাই আসছে অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্যবারের তুলনায় বেশি টাকা রেখেছে সরকার। কিন্তু তাতেও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি মন্ত্রীদের। গতকাল রবিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব তাঁদের মন্ত্রণালয়ের জন্য বাড়তি বরাদ্দের আবদার করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট করে বলেন, ‘যা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, আপাতত সেটিই খরচ করেন। বেশি করতে পারলে সামনে দেখা যাবে। ’ সাধারণত আগের বছরগুলোতে এনইসি সভায় মন্ত্রী ও সচিবরা বাড়তি টাকা চাইলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজ ক্ষমতাবলে বাড়তি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিতেন অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে। কিন্তু এবার তা করেননি প্রধানমন্ত্রী। এর কারণ হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, আসছে এডিপিতে এমনিতেই বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে। সে জন্য মন্ত্রী ও সচিবদের আবদার রাখেননি প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকার নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। আর বাকি ৫৭ হাজার কোটি টাকা আসবে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। গতকাল রবিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।
চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩৯ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ বাড়ছে আসছে এডিপিতে।
পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আসছে বাজেটে সবচেয়ে বেশি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে পরিবহন খাত। এই খাতে ৪১ হাজার ৫৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ২৭ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকছে বিদ্যুৎ খাতে—১৮ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১২ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে আছে শিক্ষা খাত—১৬ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১১ শতাংশ। বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকন্দ্রে বরাদ্দ যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি—দশ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুতে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা।