আত্মগোপনে থেকেই নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সূচনা করেছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা

0
438
গ্রেফতার আতঙ্কে রাজধানী ঢাকায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আত্মগোপনে থেকেই নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সূচনা করেছেন। একজন মেয়র প্রার্থী ছাড়া কেউই স্বশরীরে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ অথবা জমা দেননি। মেয়র পদে মনোনয়নপত্র কিনে বিএনপি সমর্থিত যে ৬ প্রার্থী জমা দিয়েছেন তাদের তিনজন রয়েছেন আত্মগোপনে। বাকি দুইজন কারাগারে। এসব প্রার্থীর পক্ষের স্বজনরা অনেকটা চুপিসারে রিটার্নিং অফিসারের দফতরে গিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেন। এরমধ্যে একমাত্র বিএনপি সমর্থিত দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী এসএম আসাদুজ্জামান রিপন নিজেই তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কারাবন্দি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মনোনয়নপত্র জমা দেন তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা। গত ২৩ মার্চ পিন্টুর আইনজীবী রফিকুল হক রির্টানিং অফিসারের কার্যালয় মহানগর নাট্যমঞ্চে গিয়ে মনোনয়নপত্রটি সংগ্রহ করেছিলেন। বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালামের পক্ষে স্ত্রী ফাতেমা সালাম মনোনয়নপত্র জমা দেন। আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে অবস্থিত ঢাকা উত্তরের অস্থায়ী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আওয়াল মিন্টুর ছেলে তাফসির এম আওয়াল তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের পক্ষে তার আইনজীবী এ্যাডভোকেট আবদুস সালাম মনোনয়নপত্র জমা দেন। মহানগর বিএনপির নেতা আবুল বাশারের পক্ষে তার আইনজীবী জমা দেন। কারাগারে থাকা বিএনপি-সমর্থিত শিক্ষক নেতা সেলিম ভুঁইয়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা জমা দেননি।
বিএনপির পক্ষ থেকে এই মর্মে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে যে, আদৌ দলের সমর্থিত প্রার্থীরা প্রকাশ্যে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন কিনা। কেবল মেয়র নয়, বিএনপি সমর্থক কাউন্সিলররাও অধিকাংশই নিজে হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দিতে পারেননি। বিএনপির লিগ্যাল এইড এ কাজ করেন এমন একজন আইনজীবী জানান, কাউন্সিলর পদে যারা বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলার বেশির ভাগেই গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে তারা ফেরারী জীবন-যাপন করছেন। এদিকে সম্প্রতি শত নাগরিক কমিটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রার্থীদের জামিন এবং প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারণায় বাধা না দেয়াসহ ৬ দফা পেশ করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, আপনারা দেখেছেন ‘গ্রেফতার আতঙ্ক’ নিয়ে অনেকে মনোনয়নপত্র কিনতে এবং জমা দিতে যাননি। গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে অনেক নেতার নামে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে চাইলে তাদেরকে প্রকাশ্যে এসে প্রচার-প্রচারণার সুযোগ করে দিতে হবে। দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, নির্বাচনের মাঠে বর্তমান পরিস্থিতিতে অনুকূলে আছে বিএনপি। তাই যে কোন পরিস্থিতিতে তারা নির্বাচন করবেন।
এদিকে ঢাকার দুই ভাগের উত্তরে আবদুল আওয়াল মিন্টুকে মেয়র পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হলেও দক্ষিণে চূড়ান্ত হয়নি। বিএনপি পন্থি ‘শত নাগরিক কমিটি’র ব্যানারে নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি। দক্ষিণে বিএনপির ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মির্জা আব্বাসকে প্রার্থী হিসাবে রাখা হয়েছে। তার মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে না টিকলে আবদুস সালামকে দেয়া হতে পারে। তাকে নিয়ে জটিলতা হলে নাসির উদ্দিন পিন্টুকে রাখা হতে পারে।