৮ থেকে ১২ জিলহজ পাঁচ দিনব্যাপী হজ কার্যক্রম। নবী পাক (সা.) ১৩ জিলহজ শয়তানকে পাথর মেরে মিনা ত্যাগ করেছিলেন। সেই মতে হজ কার্যক্রম ৬ দিন হওয়ার কথা। কিন্তু ১২ জিলহজ বিকালে শয়তানকে পাথর মেরে মিনা ত্যাগ করা একালে অনেকটা প্রচলন হয়ে গেছে। অল্প সংখ্যক হাজী ১২ জিলহজ দিবাগত রাতে মিনায় অবস্থান করে থাকেন নবী পাক (সা.)-এর সুন্নত মতে।

বস্তুত হজকে সামনে রেখে সব হজযাত্রী পবিত্র মক্কায় এসে জমায়েত হতে থাকবে। হজ তিন ধরনের। এফরাদ ও কেরান হাজীগণ মিকাতের বাইরে থেকে ইহরাম পরিধান করে পবিত্র মক্কায় আসবেন। এফরাদ হাজী হলে তাওয়াফ করে এবং কেরান হাজী হলে তাওয়াফ সায়ীর পর সেই ইহরাম অবস্থায় হজের জন্য অপেক্ষায় থাকবেন। অপরদিকে তামাত্তো হাজীরা মিকাতের বাইরে থেকে ওমরার নিয়তে ইহরাম পরিধান করে পবিত্র মক্কায় এসে তাওয়াফ সায়ী করে ইহরামমুক্ত অবস্থায় রয়েছেন।

৭ জিলহজ তামাত্তো হজযাত্রীরাও হজের নিয়তে ইহরাম পরিধান করে নেবেন। বাংলাদেশের শতকরা ৯০ জনেরও অধিক হাজী তামাত্তো হজই করে থাকেন। যেহেতু এ হজ সহজতর। ৮ জিলহজ সকালে মিনায় গমন ও অবস্থান সুন্নত কিন্তু লাখ লাখ হাজীর সুবিধার্থে সৌদির নির্দেশমতে ৭ জিলহজ দিবাগত রাত থেকে মিনায় যাওয়া শুরু হয় মোয়াল্লেম বাসযোগে। মিনায় অবস্থান করবেন মোয়াল্লেম তাঁবুতে। মিনায় ওয়াক্ত ওয়াক্ত নামাজ পড়া বাদে হজের অন্য কোনো আহকাম নেই। এখানে হাজীদের টাকায় মোয়াল্লেমরা তাঁবুতে রান্না করে খাবার সরবরাহ করে থাকেন।

৯ জিলহজ সকালে মিনা থেকে আরাফায় রওনা হওয়া সুন্নত। কিন্তু হজযাত্রীদের সুবিধার্থে সৌদির নির্দেশমতে ৮ জিলহজ দিবাগত রাতে মোয়াল্লেমরা তাদের বাসে করে মিনা থেকে আরাফায় নেয়া শুরু করে। আরাফায়ও মোয়াল্লেম দুপুরের খাবার সরবরাহ করে থাকেন।

৯ জিলহজ আরাফায় অবস্থান তিন ফরজের অন্যতম ফরজ। হজের নিয়তে ইহরাম পরিধান করা প্রথম ফরজ। সূর্য পশ্চিমাকাশে দুলে পড়া থেকে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করাটা হজের দ্বিতীয় ফরজ।

৯ জিলহজ সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুযদালিফায় রওনা হতে হবে। মুযদালিফায় পৌঁছে এক আজান দুই একামতে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বে এশা ওয়াক্তে। মিনায় শয়তানকে মারার জন্য ৪৯টি পাথর সংগ্রহ করবে মুযদালিফা থেকে। উন্মুক্ত ময়দানে রাত্রিযাপন করবে। ফজরের নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ অবস্থান করে মিনায় শয়তানকে পাথর মারার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। বড় শয়তানকে লক্ষ করে ৭টি পাথর মারবে। অতঃপর দমে শুকরিয়া তথা হজের কোরবানি করবে। যা তামাত্তো ও কেরান হাজীর জন্য ওয়াজিব। এফরাদ হাজীর জন্য মুস্তাহাব। অতঃপর মাথার চুল ফেলে ইহরামমুক্ত হবে। এরপর গোসল করে স্বাভাবিক পোশাক পরিধান করে পবিত্র মক্কায় গিয়ে হজের তৃতীয় ফরজ তাওয়াফ করবে। সঙ্গে হজের ৫ম ওয়াজিব সাফা-মারওয়া সায়ী করবে।

হজের ছয় ওয়াজিব। প্রথম মুযদালিফায় অবস্থান করা। দ্বিতীয়, মিনায় শয়তানকে পাথর মারা। তৃতীয়, দমে শুকরিয়া বা হজের কোরবানি করা। চতুর্থ, মাথার চুল ফেলে ইহরামমুক্ত হওয়া।

পবিত্র মক্কায় তাওয়াফ সায়ীর পর মিনায় এসে অবস্থান করবে যা সুন্নত। ১১ জিলহজ সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়লে প্রথমে ছোট শয়তানকে অতঃপর মেঝ শয়তান তারপর বড় শয়তানের প্রতি ৭টি করে ২১টি পাথর মেরে মিনায় অবস্থান করবে। ১২ জিলহজ ১১ জিলহজের মতো তিন শয়তানের প্রতি ২১টি পাথর মেরে সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করবে। পবিত্র মক্কায় গিয়ে অবস্থানে থাকবে। পবিত্র মক্কা ত্যাগ করার আগে হজের ৬ষ্ঠ ও শেষ ওয়াজিব খানায়ে কাবা তাওয়াফ করবে।