ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা এক বছরে অনেক বেড়ে যাওয়ায় মৈত্রী ট্রেনে আসন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১লা বৈশাখ থেকে নতুন প্রযুক্তির আট কামরা বিশিষ্ট এই ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা হবে ৪৫৬। পূর্ব রেলওয়ে সুত্রে জানানো হয়েছে, ভারতে চলাচলকারী রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো লিঙ্ক হফম্যান বুশ প্রযুক্তির কামরা দেওয়া হবে মৈত্রী ট্রেনে। নতুন এই কামরা বিশিষ্ট ট্রেনটি হবে সম্পূর্ণ বাতানুকুল। চারটি কামরা থাকবে প্রথম শ্রেণির। আর চারটি কামরা থাকবে চেয়ার-কার। কোনও সাধারণ শ্রেণির কামরা থাকবে না। এছাড়া দুটি জেনারেটর ভ্যানও ট্রেনটিতে থাকবে। মৈত্রী ট্রেনের আকর্ষণ যাত্রীদের মধ্যে বেড়ে চলায় ইতিমধ্যেই সপ্তাহে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে সপ্তাহে ছয় দিনই চলছে এই ট্রেন। তিন দিন কলকাতা থেকে ট্রেন ঢাকা যাচ্ছে আর তিনদিন ঢাকা থেকে ছেড়ে কলকাতা আসছে। এর মধ্যে দুদিন বাংলাদেশের রেক দিয়ে ট্রেন চালানো হলেও বাকী চারদিনই ভারতীয় রেক দিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে।  ২০০৮ সালের ১লা বৈশাখ প্রথম মৈত্রী ট্রেন চলাচল শুরু করে। শুরুতে যাত্রী ছিল খুবই কম। এখন টিকিটের জন্য যাত্রীদের মধ্যে চাহিদা প্রবল। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, টিকিট কাটতে গিয়ে কলকাতায় প্রবলভাবে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি টিকিট না দেওয়ার ফলেই সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। ইচ্ছে থাকলেও একাধিক দিন লাইন দিয়ে নির্দিষ্ট দিনের  টিকিট কাটতে না পেরে অনেকেই বাধ্য হয়ে বাসে বা সড়কপথে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এদিকে, ভারতের হলদিবাড়ি ও বাংলাদেশের চিলাহাটির মধ্যে আগামী এক বছরের মধ্যে ট্রেন চালানোর চিন্তাভাবনা করছে দু’দেশের সরকার। তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়  পশ্চিমবঙ্গের রাধিকাপুর ও বাংলাদেশের বিরোলের মধ্যে ট্রেন চালুর সূচনা হতে পারে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই প্রায় তিনশো মিটার দীর্ঘ মিটার গেজ লাইন তুলে ব্রড গেজ লাইন পাতা হয়েছে। দু’তরফেই তৈরি হয়েছে শুল্ক দফতরের ইউনিট। এই লাইন চালু হলে দু’পক্ষের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।  অন্যদিকে নদীপথেও পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে দুই দেশ।  আর তাই চলতি সফরে ঢাকা-কলকাতার মধ্যে একটি ‘রিভার ক্রুজ’ পরিষেবা সংক্রান্ত সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। ঠিক হয়েছে, কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে ওই ক্রুজ ছুঁয়ে যাবে হলদিয়া, সুন্দরবন, খুলনা, বরিশাল ও চাঁদপুর।