Home Hot News Today প্রধানমন্ত্রীর বিদেশে চিকিত্সা গ্রহণের নির্ভরশীলতা পরিত্যাগ করার আহ্বান

প্রধানমন্ত্রীর বিদেশে চিকিত্সা গ্রহণের নির্ভরশীলতা পরিত্যাগ করার আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে চিকিত্সা গ্রহণের নির্ভরশীলতা পরিত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কিছু মানুষ আছেন তাদের সামান্য একটু অসুখ হলেই চিকিত্সার জন্য বিদেশে যান। এ ব্যাপারে আমার তীব্র অনীহা আছে। কেন আমরা চিকিত্সার জন্য বিদেশে যাবো? আর কেন এ দেশে আন্তর্জাতিকমানের হাসপাতাল গড়ে উঠবে না? এখন থেকে তিনি গাজীপুরে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিত্সা নেয়ার ঘোষণা দেন।
গতকাল বুধবার গাজীপুরের কাশিমপুর তেতুইবাড়িতে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। কলেজটি ২০১৩ সালে ৬ একর জমির উপর ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে (পিপিপি) শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিশেষায়িত হাসপাতাল চত্বরে নির্মিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও মালয়েশিয়ার সেবা সংস্থা কামপুলান পেরুতান জহর (কেপিজে) যৌথভাবে বিশেষায়িত এ হাসপাতাল নির্মাণ করে। এই হাসপাতাল বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিত্সকরা যখন তাকে চিকিত্সার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন তখন তিনি এই হাসপাতালে এসে চিকিত্সা নেবেন। তিনি বলেন, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতাল একটি আন্তর্জাতিকমানের হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী নার্সিং পেশাকে সেরা পেশা হিসেবে উল্লেখ করে নার্সিংয়ের উপর উচ্চতর বিশেষায়িত শিক্ষা গ্রহণে এবং আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি নার্সিং পেশাকে সর্বাধিক সম্মান করি। তিনি বলেন, একজন রোগী একজন চিকিত্সকের কাছ থেকে চিকিত্সা পান। তবে সেই রোগী একজন নার্সের হাতের নরম ছোঁয়ায় দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। তিনি বলেন, একজন নার্স রোগীর মনে প্রশান্তি এনে দেয় এবং তাকে উত্সাহিত করেন। এসব বিবেচনায় আমার কাছে মনে হয়েছে নার্সিং পেশাই সমাজে সবচেয়ে ভাল পেশা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় দেশে নার্সিং পেশা খুবই অবহেলিত ছিল। নার্সদের তৃতীয় শ্রেণির ভাবা হতো। অথচ কেবলমাত্র বিজ্ঞান শাখার ছাত্র-ছাত্রীরাই এই পেশা গ্রহণ করতে পারে। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর নার্সিং শিক্ষায় কারিকুলামে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং তাদের জন্য গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স ও পিএইচডি’র মতো উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা তার মা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের বিশেষ অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীসহ সমাজের অসহায় ও দুস্থ মহিলাদের সেবা করেছেন। ২০১৩ সালে হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী যোগ দেয়ায় তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত সব সম্পত্তি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে দিয়ে দিয়েছেন। এই ট্রাস্টের টাকা আর্তমানবতার সেবা, স্বাস্থ্য সেবাসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক খাতে ব্যয় হচ্ছে। আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার সন্তান অরফানেজ ট্রাস্টে রাখা এতিমদের টাকা আত্মসাত্ করে এখন আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব শেখ হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রকল্প পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, জয়েন্ট জমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক, কেপিজে হেলথ কেয়ার বারহ্যাড’র সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী আমির উদ্দিন আবদুল সাত্তার এবং নার্সিং কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী সাদিয়া ফারহানা। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কলেজের বোর্ড অব ডাইরেক্টরস’র সদস্য নাজমুল হাসান পাপন এমপি।