নির্মাণ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চার বছর ধরে। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও নেওয়া হয়নি পথচারী কিংবা কর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রবিবার গভীর রাতে গার্ডার পড়ে ১ জন শ্রমিক নিহত ও ২ জন আহত হওয়ার পরও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের টনক নড়েনি। অনেকটা ফ্রি-স্টাইলে তারা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের স্থানগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। শান্তিনগর, মালিবাগ চৌরাস্তা, মৌচাক, মালিবাগ রেলগেট, মগবাজার ও এফডিসি ক্রসিং এলাকায় চলা ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের কোথাও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। মালিবাগ মোড়ে লোহার খুঁটি দিয়ে ফ্লাইওভারের ঢালাই কাজের আয়োজন করা হয়েছে। নিচের সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। এই সংকীর্ণ অংশ দিয়ে এলোপাতাড়ি যানবাহন চলাচল করে। যান নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে কেউ নেই।
মালিবাগ রেলগেট এলাকায় গতকাল পর্যন্ত পড়ে যাওয়া ওই গার্ডার পুনরায় তৈরির কাজ শুরু হয়নি। স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, গার্ডার স্থাপনের সময় বিশাল সব উত্তোলনকারী যন্ত্রপাতির কোনো অংশও যদি খসে পড়ে তাহলে নিচ দিয়ে চলাচলকারী মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত। এ জন্য আমরা সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। শুধু ফ্লাইওভারের কাজই নিরাপত্তাহীন নয়, নিচের সড়কও মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। শান্তিনগর থেকে মালিবাগ চৌরাস্তা হয়ে রেলগেট ও মগবাজার পর্যন্ত সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলে এসব গর্ত পানিতে ভরে যায়। তখন চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের কর্মকর্তা মো. হাতেম আলী মজুমদার বলেন, নির্মাণ কাজ চলাকালে আমরা সব সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এ জন্য কোটি কোটি টাকার নিরাপত্তা সামগ্রী কেনা হয়েছে। আমরা সামনে থাকলে কর্মীরা নিরাপত্তা সামগ্রী পরেন, আর চলে এলে খুলে ফেলেন।
উল্লেখ্য, মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজে অসতর্কতার কারণে রবিবার গভীর রাতে মালিবাগ রেলগেটে একটি গার্ডার পড়ে গেলে এক ব্যক্তি নিহত ও অপর দু’জন আহত হন। ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ চলাকালে এ পর্যন্ত ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।