ছিটমহলের বাসিন্দারা বাংলাদেশ না ভারতে থাকতে চায়- এ সংক্রান্ত যৌথ আদমশুমারি শেষ ধাপে রয়েছে। জরিপে ভারত ও বাংলাদেশে অবস্থিত সব ছিলমহলগুলোর বাসিন্দাদের অধিকাংশ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চেয়েছেন।

আদমশুমারি রিপোর্টে দেখা গেছে, বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের ১১১টি ছিটমহলের ৩৭ হাজার বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ১১৭৩ জন ভারতের নাগরিকত্ব চেয়েছেন। বাকি প্রায় ৩৬ হাজার বাসিন্দাই থাকতে চান বাংলাদেশে। এখন ১১৭৩ জনকে ভারত সরকার নিজ দেশে জায়গা দেবে, নাগরিকত্ব দেবে।

বাংলাদেশি ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকের আগে বুধবার আদমশুমারির এ ফলাফল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। রাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, শুমারিতে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাসিন্দাই নিজেদের জমি ও সম্পদ ছেড়ে যেতে চান না। তারা বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেওয়ার কথাই জানিয়েছেন। তবে অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ভারতে যেতে চাইলে তাদের কী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তা তারা এখনো জানেন না।

বাংলাদেশে অবিস্থত ভারতীয় ছিটমহলের অধিকাংশ বাসিন্দা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছেন । এর কারণ সমন্ধে কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতের রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিলেও চূড়ান্ত প্যাকেজ এখনো ঘোষণা করেনি। ফলে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দারা ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণের ব্যাপারে অনাগ্রহী।

মুক্তভাবে নিজেদের মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে ভারতীয় ছিটমহল বসবাসরত ব্যক্তিদের ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে- কর্মকর্তাদের কাজে অনেকের অভিযোগ করেছেন। তাদের নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে প্রতিবেদনে দাবি হয়েছে।

সরকারী সূত্রমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলে ১৪ হাজার লোক বাস করে। অপরদিকে বাংলাদেশের চারটি জেলায় ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলে বাস করে ৩৭ হাজার লোক।

৬ জুলাই শুরু হওয়া যৌথ আদমশুমারির ৮০ শতাংশ জরিপকাজ শেষ হয়েছে। ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে ওই কাজ সম্পন্ন হবে। ৩১ জুলাই ছিটমহল বিনিময়ের কাজ শুরু হবে।

কোচবিহারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি উলাগানাথান জানিয়েছেন, একজন বাংলাদেশি ও একজন ভারতীয়, দুজন করে ৭৫টি টিম গঠন করে জরিপের কাজ বণ্টন করা হয়েছে। ৭৫ এর মধ্যে ২৫টি টিম বাংলাদেশের ছিটমহলে এবং বাকি ৫০ টিম ভারতের ছিটমহলে কাজ করছে। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জরিপ কাজ শেষ হবে।