ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে এরকম একটি ছোট্ট যন্ত্র তৈরি করেছে একটি কোম্পানি। বলা হচ্ছে, এই যন্ত্রটি দিয়ে ম্যালেরিয়ার জীবাণুর জিন বিন্যাস বা জেনোম সিকোয়েন্স করা যেতে পারে।

এ থেকে চিকিৎসকরা খুব দ্রুতই জানতে পারবেন যে রোগী কোন ধরনের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে প্রতি বছর পাঁচ লাখের মতো মানুষের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হয়।

মশা এই ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে। এই জীবাণুর রয়েছে নানা রকমের প্রজাতি। কোনো কোনোটি আবার ওষুধ প্রতিরোধী।

অক্সফোর্ড ন্যানোপোর নামের একটি কোম্পানির গবেষকরা এমন একটি মোবাইল যন্ত্র তৈরি করেছেন যা দিয়ে ম্যালেরিয়ার জীবাণুটি কোন প্রজাতির সেটি জানা সম্ভব। যন্ত্রটির নাম মিনায়ন। দেখতে অনেকটা মোবাইল ফোনের মতো।

গবেষকরা বলছেন, এর সাহায্যে ওই জীবাণুর ডিএনএর প্যাটার্ন সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া যায়। বলা হচ্ছে, এই যন্ত্রটি একটি সিকোয়েন্সার।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উওকাতা সুজুকি বলেছেন, “মিনায়ন সিকোয়েন্সারের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে যে, এর মাধ্যমে গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় এলাকায় যেসব রোগ বালাই হয় অর্থাৎ সেসব ট্রপিক্যাল ডিজিজের চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে রোগী যখন খুব মারাত্মক জীবাণুতে বা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয় তখন তার আর সময় নষ্ট করা চলে না। এই ডিএনএ বিশ্লেষণের কাজ আমরা শুরু করেছি ম্যালেরিয়ার জীবাণু, যক্ষ্মার জন্যে দায়ী ব্যাকটেরিয়া এবং ডেঙ্গির ভাইরাস নিয়ে। আমরা দেখেছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এর সাহায্যে তথ্য পাওয়া সম্ভব।”

এই যন্ত্রটিকে যুক্ত করা হয় ল্যাপটপের সাথে। তারপর এই সিকোয়েন্সার থেকে তথ্য ল্যাপটপে নিয়ে ম্যালেরিয়ার জীবাণুর ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। চিকিৎসকরা তখন বুঝতে পারেন যে তারা আসলে কোন প্রজাতির জীবাণুকে ধ্বংস করতে কাজ করছেন। তখন তারা বের করতে পারেন যে কোন ওষুধ ওই জীবাণুকে ধ্বংস করতে সফল হতে পারে।

প্রফেসর সুজুকি মনে করেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে ছোট্ট এই যন্ত্রটি বড় রকমের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কারণ এর খরচ খুব কম এবং এটিকে হাতে বহন করা যায়।

তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সহজেই এই মিনায়ন যন্ত্রটি কিনতে পারেন। কারণ এটি খুব সস্তা। এর দাম কোনভাবেই এক হাজার ডলারের বেশি নয়।”

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই যন্ত্রটি দিয়ে নির্ভুলভাবে ডিএনএর বিশ্লেষণ করা সম্ভব। এটি দিয়ে যেকোনো প্রাণীর জিন সিকোয়েন্স করা যায়। ফলে অন্যান্য রোগের চিকিৎসাতেও এই মিনায়নকে কিভাবে ব্যবহার করা যায় বিজ্ঞানীরা এখন সেটিই পরীক্ষা করে দেখার চেষ্টা করছেন।