স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিলো বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানকে পেছনে ফেলতে শুরু করেছে। দি ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীনতাকালীন বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) শিল্পের অবদান ছিলো মাত্র ৬ থেকে ৭ ভাগ। অন্যদিকে পাকিস্তানে শিল্পের অবদান ছিলো প্রায় ২০ ভাগ। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ২৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
গত অর্থবছরের হিসাবে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি ১ হাজার ৫৩৮ ডলার। অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা ছিল ১ হাজার ৪৭০ ডলার। এটা পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ারই আভাস দিচ্ছে। গত ২৫ আগস্ট আদমশুমারির ফলাফল প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। সেখানে তারা দেখিয়েছে, দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ২০ কোটি ৭৮ লাখ, যা আগের থেকে ৯০ লাখ বেশি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে তাদের মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৪-৫ শতাংশ। তবে ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে বর্তমানে পাকিস্তান বিশ্বের পঞ্চম জনবহুল দেশে পরিণত হয়েছে। মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ কম হলেও বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেশি।
বাংলাদেশের বর্তমান বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার এক দশক ধরে ৬ শতাংশের উপরে রয়েছে। গত দুই বছরে তা ৭ শতাংশের ওপরে দাঁড়িয়েছে। যে দেশটি একসময় কাপড়ের সংকটে ভুগত, সেই দেশ এখন ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে বেশি পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। যদিও কাজের পরিবেশ এখনো উন্নত নয়, তারপরও আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। যুদ্ধে বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট, শিল্পকারখানা, রেলপথ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ১৯৭০-এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু মানুষ নিহত হয় এবং ব্যাপক ক্ষতি হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি তুলনা করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার ফলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার মাথাপিছু হিসাবে বেড়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মাথাপিছু জিডিপিও ক্রমান্বয়ে কমে গেছে। দ্য ইকোনমিস্ট।