চীন বলছে সেদেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় তিনটি সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম – ওয়েবো, উইচ্যাট এবং বাইদু তিয়েবার বিরুদ্ধে তারা তদন্ত করছে। তাদের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইন লংঘনের অভিযোগ উঠেছে।
সাইবারস্পেস প্রশাসনের পক্ষ বলা হচ্ছে এই তিনটি প্ল্যাটফর্মে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত বিষয়, গুজব এবং অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রশাসন আরও বলছে এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা লংঘিত হচ্ছে।
ইন্টারনেটের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষের কঠোর সেন্সরশিপ রয়েছে। তারা নিয়মিতভাবে স্পর্শকাতর বিষয়বস্তু বন্ধ করে দেয় অথবা স্পর্শকাতর বিষয় কেউ খুঁজতে চেষ্টা করলে তা আটকে দেয়।
ওয়েবো হচ্ছে টুইটারের মত মাইক্রোব্লগিং সাইট, উইচ্যাট তাৎক্ষণিক বার্তা পাঠানোর মেসেজিং অ্যাপ এবং বাইদু তিয়েবা একটি জনপ্রিয় অলোচনা ও বিতর্কের ফোরাম। এই তিনটি সাইটেই সক্রিয়ভাবে অংশ নেন চীনের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
চীনের সাইবারস্পেস প্রশাসন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তারা এই তিনটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহিংসতা, সন্ত্রাস, মিথ্যে গুজব, অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফি এবং পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও জন নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ও সমাজ বিরোধী কর্মকাণ্ড ছড়াচ্ছে।
রয়টার্স বাইদুকে উদ্ধৃত করে বলছে তারা এর জন্য “দুঃখপ্রকাশ” করেছে এবং বলেছে তারা “সরকারের সঙ্গে সক্রিয় সহযোগিতা” করবে এবং ”আরও কঠোর নজরদারি বাড়াবে। ”
তবে উইচ্যাট আর ওয়েবোর মালিক সংস্থা টেনসেট-এর পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
চীনে ইন্টারনেট কনটেন্টের ওপর ইতিমধ্যেই সরকারের কড়া নজরদারি এবং সেন্সরশিপ আছে, কিন্তু পর্যবেক্ষকরা বলছেন জনপ্রিয় এই তিনটি সাইটের বিরুদ্ধে তদন্ত চালু করা হলে এই সাইট যারা চালায় তাদের দিক থেকেও বাড়তি নিয়ন্ত্রণ আরোপের তাগিদ বাড়বে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
গত মাসে চীন কর্তৃপক্ষ তারকাদের নিয়ে গালগল্পের ৬০টি জনপ্রিয় সাইট রাতারাতি বন্ধ করে দিয়েছিল এই অভিযোগে যে তাদের কনটেন্ট দেশটির ”সামাজিক মূল্যবোধের” অবক্ষয় ঘটাচ্ছে। মে মাসে সরকার একটি নতুন বিধিমালাও জারি করেছে যার আওতায় কম্যুনিস্ট পার্টির অনুমোদন প্রাপ্ত সম্পাদকীয় কর্মকর্তাদের অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক এক রিপোর্টে বলা হয় ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপ করে যেসব দেশ তার তালিকায় শীর্ষস্থান চীনের। ওই রিপোর্টে বলা হয় ইন্টারনেট ব্যবহার করে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ প্রকাশের সুযোগ সবচেয়ে বেশি মাত্রায় খর্ব করা হয়েছে চীনে এবং মত প্রকাশের জন্য কঠোর শাস্তির নজিরও চীনেই সবচেয়ে বেশি।
চীন বিদেশি সামাজিক যোগাযোগ সাইটএবং অ্যাপস্ যেমন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং টুইটার বন্ধ করে দিয়েছে।
গুগুলের মত সার্চ এনজিন চীনে বন্ধ, বহু বিদেশি সংবাদমাধ্যমের ওপরও চীনে বিধিনিষেধ রয়েছে।
– বিবিসি বাংলা