বিএনপি মহাসচিব
বিএনপি মহাসচিব

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০১৮ হচ্ছে- খালেদা জিয়ার বছর, বিএনপির বছর। ২০১৮ সাল হচ্ছে জনগণের বছর, গণতন্ত্রের বছর। সেটা ইনশাআল্লাহ আমরা প্রমাণ করব আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, বিজয়ের মধ্য দিয়ে।

শুক্রবার বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ‘একদলীয়’ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। আলোচনা সভায় গণতন্ত্র হত্যার প্রতিবাদে আইনজীবীরা কালো পতাকা প্রদর্শন করেন।

দেশের মানুষকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে সবাইকে গ্রামে-গঞ্জে’ ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের এখন জোট বাঁধতে হবে, আমাদের জেগে উঠতে হবে। মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে এবং মানুষকে জাগিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে একমাত্র গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।

তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি একটি কলঙ্কিত দিন বটেই। আমরা কাছে দুঃখ লাগছে যে আওয়ামী লীগের জন্য এটি একটি সবচেয়ে কলঙ্কিত দিন। আওয়ামী লীগের মতো একটা পার্টি যাদের দীর্ঘ একটা ঐহিত্য আছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে। তারা (আওয়ামী লীগ) কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে তাদের আজকে পুলিশ-র‌্যাব-বন্দুক-পিস্তলের সহায়তা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে নির্বাচন না দিয়ে। নির্বাচন দিলে পরাজয় অবশ্যসম্ভাবী হবে, ভরাডুবি হবে তাদের।

৫ জানুয়ারির বর্ষপূর্তিতে ঢাকায় বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়ার ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি পুলিশ দেয়নি। আমরা পার্টি অফিসে সামনে অনুমতি চেয়েছিলাম। কালকে আমাদের একটি প্রতিনিধিদের ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তারা (ডিএমপি) বলেছে, ওইটা তো প্যাসেজ হয়ে যায়, রাস্তায় পড়ে, মেইন রোড।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন এই অনুষ্ঠানে আসছিলাম তখন দেখলাম বনানী রোড়, গুলশান রোড় পুরো ব্লক। তারা ট্রাক দিয়ে, বাস দিয়ে লোক দিয়ে আসছে, সেটা জায়েজ।

‘বর্তমানে দেশে ফ্যাসিস্ট শাসন চলছে’- অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রায় এক যুগ থেকে চলেছে। আমরা একটা ফ্যাসিবাদের ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে বাস করছি। আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের প্রশাসন, আমাদের আইন-বিচার- সব কিছুই ফ্যাসিস্টরা পরিচালিত করছে। পোশাকে গণতন্ত্র লেবাসের ছাপ দেয়া আছে। ভেতরে একদলীয় শাসন।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয়, সবচেয়ে পবিত্র জায়গা, সবচেয়ে নির্ভরশীল জায়গা। যেখানে গেলে আমি আশ্রয় পাব। সেই জায়গার কী হাল হয়েছে? তার প্রধানকে কিভাবে চলে যেতে হয়েছে? পৃথিবীতে এই ধরনের নজির কম আছে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব সানাউল্লাহ মিয়ার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বোরহান উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য খোরশেদ আলম, ইকবাল হোসেন, জেড এম মূর্তজা চৌধুরী তুলা, মোহাম্মদ আলী, ওয়াহিদুজ্জামান দীপু, রফিক শিকদার, খালেদা পান্না, মিয়া খোরশেদ আলম মিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা, অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন ফকির, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজাসহ আইনজীবীরা অংশ নেন।