Home বাংলাদেশ অন্যান্য নৌপথ উদ্ধারে ১৭৮ নদী খননের উদ্যোগ

নৌপথ উদ্ধারে ১৭৮ নদী খননের উদ্যোগ

0
নৌপথ উদ্ধারে ১৭৮ নদী খননের উদ্যোগ
নৌপথ উদ্ধারে ১৭৮ নদী খননের উদ্যোগ

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথের দৈর্ঘ্য শুষ্ক মৌসুমে ২ হাজার কিলোমিটার কমে যায়। ৪৯১ কিলোমিটার নৌপথের নাব্য পুনরুদ্ধারে সরকার ১৭৮টি নদী খনন করবে।

রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন মন্ত্রীর পক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রশ্নের জবাব দেন। মন্ত্রী এসময় আরিচা-দৌলতিয়ায় ফেরি পারাপারে যানজট সৃষ্টির জন্য নাব্যতা, ঘাট ও কুয়াশাজনিত কারণের পাশাপাশি আটরশি ও চন্দ্রপাড়ার ওরশকে দায়ী করেন।

রহিম উল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌপথের দৈর্ঘ্য বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে ছয় হাজার কিলোমিটার ও শুষ্ক মৌসুমে চার হাজার কিলোমিটার। অভ্যন্তরীণ নৌপথ বৃদ্ধি করতে সারা দেশের ৫৩টি নৌপথের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় ১২টি নৌপথ খননের কাজ চলছে।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে মরে যাওয়া প্রায় এক হাজার ২০০ কিলোমিটার নৌপথ খননের মাধ্যমে বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, ভবিষ্যতে নৌপথ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ পরিকল্পনার আওতায় আরও ১৭৮টি নদী খনন করা হবে।

পরে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ড্রেজিংয়ের জন্য অর্থের অভাব আছে। আবার অর্থের অভাব নেই। এদিকে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীর সুদৃষ্টি আছে।

পঙ্কজ কুমার দেবনাথের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী দাবি করেন, দক্ষিণাঞ্চলের সমস্যা অনেকেই বোঝে না।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সরকার দেশের ৪৯১টি নৌ-পথের নাব্যতা পুনঃরুদ্ধারের লক্ষ্যে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর আওতায়ই ১৭৮টি নদী খনন করা হবে। যার অংশ হিসেবে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের ৫৩ রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (১ম পর্যায় : ২৪ নৌপথ) প্রকল্প এবং ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথের খনন প্রকল্পের কাজ চলছে।

তিনি বলেন, বলেশ্বর-পায়রা নৌপথ এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার, পূণর্ভবা, তুলাই ও সোয়া নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনুরুদ্ধার প্রকল্পের সমীক্ষা শেষ হয়েছে। বর্তমানে এটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া সাঙ্গু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলী, ঘাঘট, বানার লোয়ার, নাগদা, জিনাই, গোমতী ও হাওর অঞ্চলের ১৮টি নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং দ্বারা নাবত্যা বৃদ্ধি, নিস্কাসন ব্যবস্থা উন্নতি, পর্যটন, জলাভূমি, ইকোসিস্টেম, সেচ এবং ল্যান্ডিং সুবিধাদি সমন্বিত নদী ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কাজগুলো চলমান রয়েছে।

মো. আনোয়ারুল আজীম আনারের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আরিচা ও দৌলতিয়া নৌপথে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। ওই ঘাটে দৈনিক গড়ে চার হাজার ৪০০ গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। মাঝে মাঝে নাব্যতা সংকট, ঘাট বিপর্যয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বিশেষত কুয়াশা) এবং আটরশি ও চন্দ্রপাড়া ওরশের কারণে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পারাপারে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, কেবলমাত্র কুয়াশাজনিত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করলে ফেরি পারাপার প্রলম্বিত হয়। তবে কুয়াশা কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে উত্থাপিত প্রশ্নে আনার অভিযোগ করেন, আরিচা ও দৌলতিয়া ঘাটে পারাপারের জন্য ৭-৮ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে চারটি উদ্ধারকারী জাহাজ রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) মাধ্যমে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দুইটি টাগ কেনার কাজ চলছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেও আরও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাগ ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।