আগে জার্মানি আসতে হলে হাতে একটি নিশ্চিত চাকরির অফার (Job Offer) থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু ২০২৫ সালে সেই দিন শেষ।
জার্মানি এখন দক্ষ কর্মীদের জন্য তাদের দরজা আরও প্রশস্ত করেছে। নতুন ‘চ্যান্সেনকার্ড’ (Opportunity Card) চালু হওয়ার ফলে, এখন বাংলাদেশি গ্র্যাজুয়েট এবং দক্ষ পেশাজীবীরা চাকরি খোঁজার জন্যই জার্মানি আসার সুযোগ পাচ্ছেন।
এটি অনেকটা কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার “পয়েন্ট বেসড” সিস্টেমের মতো। আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী পয়েন্ট থাকলে, আপনিও এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
চলুন দেখে নিই, এই ভিসার যোগ্যতা এবং নিয়মাবলি।
১. প্রাথমিক যোগ্যতা (The Basics)
পয়েন্ট হিসাব করার আগে আপনাকে নিচের ৩টি শর্ত পূরণ করতে হবে:
-
শিক্ষাগত যোগ্যতা: একটি ইউনিভার্সিটি ডিগ্রি অথবা অন্তত ২ বছরের ভোকেশনাল ট্রেনিং (যা বাংলাদেশে সরকার স্বীকৃত)।
-
ভাষা: জার্মান ভাষা (A1 লেভেল) অথবা ইংরেজি ভাষা (B2 লেভেল)। (হ্যাঁ, শুধু ভালো ইংরেজি জানলেও আপনি আবেদন করতে পারবেন!)
-
অর্থনৈতিক সক্ষমতা: জার্মানিতে এসে কাজ না পাওয়া পর্যন্ত নিজের খরচ চালানোর মতো টাকা বা ‘Blocked Account’-এ অর্থ থাকতে হবে (২০২৫ সালের হিসেবে মাসে প্রায় ১,০৯১ ইউরো)।
২. জাদুকরী ৬ পয়েন্ট (The Magic Number)
প্রাথমিক যোগ্যতা পূরণ হলে, ভিসার জন্য আপনাকে অন্তত ৬ পয়েন্ট পেতে হবে। নিজের পয়েন্ট নিজেই হিসাব করুন:
-
৪ পয়েন্ট: যদি আপনার বিদেশি ডিগ্রি জার্মানির ডিগ্রির সমমান হয় (Full Recognition)।
-
৩ পয়েন্ট: গত ৭ বছরের মধ্যে আপনার পেশায় অন্তত ৫ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে।
-
২ পয়েন্ট: গত ৫ বছরের মধ্যে অন্তত ২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে।
-
২ পয়েন্ট: আপনার বয়স যদি ৩৫ বছরের নিচে হয়।
-
১ পয়েন্ট: বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হলে।
-
১ পয়েন্ট: জার্মান ভাষায় দক্ষতা (A2 লেভেলের জন্য ১ পয়েন্ট, B1 বা তার ওপরের জন্য আরও বেশি)।
-
১ পয়েন্ট: ইংরেজি ভাষায় C1 লেভেলের দক্ষতা থাকলে।
-
১ পয়েন্ট: যদি অতীতে আপনি বৈধভাবে টানা ৬ মাস জার্মানিতে বসবাস করে থাকেন।
৩. এই ভিসায় আপনি কী করতে পারবেন?
এই ভিসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি জার্মানি এসে ১ বছর পর্যন্ত থাকার সুযোগ পাবেন চাকরি খোঁজার জন্য।
-
পার্ট-টাইম কাজ: ফুল-টাইম চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আপনি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন। এটি দিয়ে আপনি সহজেই নিজের থাকা-খাওয়ার খরচ মেটাতে পারবেন।
আমাদের পরামর্শ
আপনার বয়স যদি ৩৫-এর নিচে হয়, হাতে একটি ব্যাচেলর ডিগ্রি থাকে এবং ইংরেজির হাত ভালো হয়—তবে সম্ভবত আপনার ঝুলিতে ৬ পয়েন্ট এখনই আছে। দালাল বা এজেন্সির ওপর নির্ভর না করে, নিজেই কাগজ গুছিয়ে প্রস্তুত হন। জার্মানি আপনার অপেক্ষায়!

