মৌলভীবাজারের চারটি সংসদীয় আসনে তিনটিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। একটি আসনে কোনো প্রার্থী ঘোষণা না করায় তা শরিক দলের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার ২ (কুলাউড়া উপজেলা) বাদে মৌলভীবাজার ১,৩ ও ৪ আসনের জন্য আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রদান করা হয়।
দলের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত মনোনয় পত্রে জানানো হয় মৌলভীবাজার ১ (বড়লেখা-জুড়ি) আসনে বর্তমান এমপি হুইপ মো. শাহাব উদ্দিনকে পুরঃনায় মনোনয় দেয়া হয়।
মৌলভীবাজার ৩ (সদর-রাজনগর) আসনে বর্তমান এমপি সৈয়দা সায়রা মহসীন এর বদলে নৌকার মাঝি হয়েছেন দলের জেলা সভাপতি নেছার আহমদ। মৌলভীবাজার ৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনে টানা ষষ্ঠবারের মতো দলের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপি।
ষষ্ঠবারের মতো মৌলভীবাজার ৩ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনে দলের মনোনয় পাওয়ার ব্যাপারে উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘ আসলে আমি ৭ বার দলের মনোয়ন পেয়েছি।
একবার নির্বাচনে যায়নি আমার দল৷ যে পাঁচবার নির্বাচন করেছি তাতে একাধারে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি। এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার উপর আস্থা রেখেছেন। আমি আশা রাখি আবারও নির্বাচিত হয়ে এই জনপদের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পাব।
এদিকে জেলার সব আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ি) আসনে একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বর্তমান এমপি হুইপ মো: শাহব উদ্দিন। তাই কোনো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় দলের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
শাহাব উদ্দিন বলেন, আমার আসনে আওয়ামীলীগ থেকে আমার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এখানকার দলের সবাইকে নিয়ে আমি মানুষের সেবা করে আসছি। আবারও আমাকে দল মনোনয়ন দিয়েছে আমাকে। আমি নির্বাচিত হলে অতীতর ধারাবাহিকতায় দলমত নির্বিশেষে এলাকার উন্নয়নে কাজ করব।
এদিকে মৌলভীবাজার ১ ও ৪ আসনে বর্তমান সাংসদরা মনোয়ন পেলেও সদর (মৌলভীবাজার ৩) আসনে নতুন মুখের আগমন ঘটেছে। দলের জেলা সভাপতি নেছার আহমদকে মনোনয়ন প্রদানের ফলে জেলা শহরজুড়ে নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে।
ইতিমধ্যে শহরের চৌমুহনায় নেছার আহমদের সমর্থকরা মিষ্টি বিতরণ করেছেন। তবে শুরু থেকে বর্তমান এমপি সায়রা মহসিন পুনরায় মনোনয়ন পাচ্ছেন এমন সুর ওঠেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত চিঠি আসে নেছার আহমদের কাছে।
তবে মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও নৌকার পক্ষে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন বর্তমান এমপি সায়রা মহসিন। তিনি বলেন, আমার স্বামী সৈয়দ মহসিন আলী এই আসনের এমপি ছিলেন। সর্বশেষ সমাজকল্যাণ মন্ত্রীও হয়েছিলেন। তারা মৃত্যুর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়ে সংসদে নিয়েছিলেন।
এই সময়ে আমি আমার স্বামীর অসম্পূর্ণ কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি মনোনয়ন না পাওয়ার মতো কোন কারণ ছিলো না। তার পরও দল যাকে ভালো মনে করেছে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি নৌকার পক্ষে কাজ করে যাব।
মনোনয়ন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নেছার আহমদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার যোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই করে এই আসনে নৌকার মাঝি করেছেন। আমার বিশ্বাস আমি সেখানে জয়লাভ করতে পারবো। কারণ বর্তমান এমপিকে বাদ দিয়ে আমাকে মনোনয়ন দেয়ার মানে হলো আমার দায়িত্ব অনেক বেড়ে যাওয়া।
আমি সর্বদা সততা ও নিষ্ঠার সাথে মানুষের জন্য কাজ করেছি তেমনি ভাবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে গেলে দল মত নির্বিশেষে মানুষের জন্য কাজ করে যাব।
জেলা একটি আসনে দলের প্রার্থী ঘোষণা না করার ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে নেছার আহমদ বলেন, ‘ তিনটি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু মাত্র মৌলভীবাজার ২ আসনে কোন প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।